সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিদ্যাসাগর কলেজে মূর্তি ভাঙার ৬ বছর পর ফের বঙ্গ রাজনীতির দুই যুযুধান প্রতিপক্ষের সংঘাতের কেন্দ্রে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। আজ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মবার্ষিকী। এদিন সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের পুজো উদ্বোধনে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঈশ্বরচন্দ্রের ভূয়সী প্রশংসা করে গিয়েছেন। তার পর পরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শাহকে ৬ বছরের পুরনো ‘পাপে’র কথা মনে করিয়ে দিলেন। অভিষেক বলে দিলেন, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হয়েছিল শাহের নেতৃত্বেই। বিদ্যাসাগরের মূর্তির সামনে দাঁড়িয়েই ক্ষমা চাওয়া উচিত তাঁর।
বিদ্যাসাগরের জন্মবার্ষিকীতে বিদ্যাসাগর কলেজে গিয়েই বাংলার মহান সমাজ সংস্কারককে শ্রদ্ধা জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তারপরই অমিত শাহকে নিশানা করে অভিষেক বলে গেলেন, “৬ বছর আগে অমিত শাহর নেতৃত্বেই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হয়েছিল। বহিরাগতরা মূর্তি ভেঙেছিল। কলকাতা শহরকে সেদিন জল্লাদদের উল্লাসমঞ্চে পরিণত করা হয়েছিল।” তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, ” বাইরে থেকে যারা এসেছিল, উত্তর ভারতের সংস্কৃতি চাপাতে চেয়েছিল। মূর্তি ভাঙার ফল বাংলার মানুষ তাদের দিয়েছে।”
শাহের উদ্দেশে অভিষেকের কটাক্ষ, “আমার সত্যি খারাপ লাগল আমি যখন শুনলাম ঠিক ১০ মিনিট দূরে তিনি একটি পুজো উদ্বোধন করতে এসেছেন। অথচ তাঁর এতটুকু বিবেকবোধ নেই যে ১০ মিনিট দূরে বিদ্যাসাগরের বাড়ি বা বিদ্যাসাগর কলেজে গিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করি। এই জন্যই এদের বাংলা বিরোধী বলি।”
এদিন অবশ্য সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের পুজো উদ্বোধনের মঞ্চ থেকেই অমিত শাহ বিদ্যাসাগরকে স্মরণ করেছেন। বলা ভালো, ভূয়সী প্রশংসা করেন ইশ্বরচন্দ্রের। সবটাই ৬ বছর আগের ‘পাপক্ষয়ে’র চেষ্টা হিসাবে দেখা হচ্ছে। যদিও শাহের এই বিদ্যাসাগর স্মরণের নেপথ্যে রাজনীতি দেখছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। ২০১৯ সালে ভোটের প্রচারে কলকাতায় এসেছিলেন অমিত শাহ। অভিযোগ, বিদ্যাসাগর কলেজের সামনে দিয়ে তাঁর রোড-শো যাওয়ার সময় সেই মিছিল থেকে প্ররোচনা দিয়ে দলের কর্মী-সমর্থকদের উত্তেজিত করে হামলা চালানো হয়েছিল বিদ্যাসাগর কলেজে। ভেঙে ফেলা হয় বিদ্যাসাগরের মূর্তি। ২০০ বছরের জন্মবার্ষিকী ছিল সে বছর। রাজনীতির আবহে তুমুল বিতর্ক দানা বাঁধে। পরে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখেও পড়তে হয় বিজেপিকে। ৬ বছর বাদে শাহের বিদ্যাসাগর স্মরণকে তাই অনেকে সেই ঘটনার ড্যামেজ কন্ট্রোল হিসাবে দেখছেন। অভিষেক অবশ্য বিজেপিকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি।