• ডাকব্যালট গণনা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের নতুন সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক
    আজকাল | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভোটগণনার নিয়ম নিয়ে আবারও বিতর্ক শুরু হয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর ডাকব্যালট গণনার ধীরগতিকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যে নতুন নিয়ম চালু করেছিল, তা নিয়ে বিরোধী দলগুলো বারবার আপত্তি জানিয়ে আসছে। এবার সেই ইস্যু ফের শিরোনামে এসেছে, কারণ শিগগিরই সারা দেশে ভোটার তালিকার বিশেষ পুনর্বিবেচনা প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

    ২০১৯-এর পর থেকে প্রবীণ ভোটারদের জন্য চালু হওয়া ঘরে বসে ভোটদান (হোম ভোটিং) সুবিধার ফলে ডাকব্যালটের সংখ্যা বেড়েছে। কমিশনের মতে, এত বিপুল ডাকব্যালট গণনা শেষ হওয়া পর্যন্ত ইভিএম ভোটের ফল প্রকাশ না করার পুরনো নিয়মে দেরি হচ্ছিল। তাছাড়া, প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রে পাঁচটি বুথে ভোটার-ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিপ্যাট) গণনার প্রক্রিয়া কেবল ইভিএম ফল ঘোষণার পরেই শুরু হয়।

    আরও পড়ুন: রক্ষকই ভক্ষক! ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে মহিলা ইনফ্লুয়েন্সারের নাম-ঠিকানা বার করে এ কী করলেন পুলিশকর্মী? রাগে কাঁপছে নেটপাড়া

    ফলে, কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় যে ইভিএম ভোটের গণনা আগের মতোই ডাকব্যালট গণনার সঙ্গে একসঙ্গে শুরু হবে, তবে ইভিএম গণনা শেষ হওয়া মাত্র তার ফলাফল ঘোষণা করা যাবে, ডাকব্যালট শেষ হওয়ার অপেক্ষা করতে হবে না। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, এই নিয়মে কারচুপির সুযোগ থেকে যায় এবং ডাকব্যালটের গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়া হয়। ২০২০ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এই নিয়মকে ঘিরে প্রবল বিতর্ক দেখা দেয়। বিশেষ করে হিলসা আসনে পুনর্গণনার দাবি ওঠে। সেখানে জেডিইউ মাত্র ১২ ভোটে রাজদ-কে হারায়। কিন্তু দেখা যায়, মোট ৫৫১টি ডাকব্যালটের মধ্যে ১৮২টি অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

    ডিএমকে-ও এ বছর জুলাইয়ে ফের দাবি তোলে যে ২০১৯-পূর্ববর্তী নিয়মে ফিরে যাওয়া উচিত, যেখানে ডাকব্যালট গণনা সম্পূর্ণ না হলে ইভিএমের ফল প্রকাশ করা যেত না।

    নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত সামনে এল এমন এক সময়ে, যখন তারা রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আরও পরামর্শমূলক পদ্ধতি নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিশেষত বিহারে ভোটার তালিকা পুনর্বিবেচনা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলার রায় ঘোষণার পর সারা দেশে বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধনের ঘোষণা আসতে পারে।

    রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ডাকব্যালট গণনার এই নতুন নিয়ম ভোটদানে স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলছে। কমিশনের লক্ষ্য প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করা হলেও বিরোধীরা আশঙ্কা করছে, এতে গণনার নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়বে। একদিকে দ্রুত ফল ঘোষণার যুক্তি, অন্যদিকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার দাবি— এই টানাপোড়েন ঘিরেই দেশজুড়ে নতুন করে বিতর্ক জোরদার হচ্ছে।
  • Link to this news (আজকাল)