আজকাল ওয়েবডেস্ক: উৎসবে মেতেছে বাঙালি। তবে পুজো যে নিশ্চিন্তে কাটবে না, তা একপ্রকার নিশ্চিত হাওয়া অফিসের সতর্কবার্তায়। আবহাওয়া দপ্তর আগেই জানিয়েছিল, দুই নিম্নচাপের সাঁড়াশি আক্রমণে উত্তাল হবে বাংলা। মাঝে মাঝেই বৃষ্টি হচ্ছে বিক্ষিপ্তভাবে জেলায় জেলায়। হাওয়া অফিস শুক্রবার জানিয়ে দিল, পুজোর কয়েকদিনেও ভাসবে বাংলা। আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, বঙ্গোপসাগরে ফের একটি নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হয়েছে। সেটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। শনিবারের মধ্যেই তা ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। ফলে পুজোর দিনগুলিতে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
এই নিম্নচাপটি দক্ষিণ ওড়িশা-উত্তর অন্ধ্র উপকূল দিয়ে শনিবার স্থলভূমিতে প্রবেশ করে ক্রমশ মধ্য ভারতের দিকে এগিয়ে যাবে। শনিবার সকালে সেটি দক্ষিণ ওড়িশা-উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল পার করবে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, এই গভীর নিম্নচাপটির সরাসরি প্রভাব দক্ষিণবঙ্গের উপর পড়বে না। তবে গভীর নিম্নচাপটি বড়ো এলাকাজুড়ে অবস্থান করার জন্য ও এখন বর্ষা বিদায়ের সময় হওয়ায় এর পরোক্ষ প্রভাব কিছুটা পড়বে। মূলত পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলির কয়েকটি অংশে ভারী বৃষ্টি হবে। এছাড়াও, মৌসম ভবন জানিয়েছে দুর্গাপুজোর অষ্টমী থেকে দশমীর মধ্যে নতুন করে আরও একটি নিম্নচাপ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে। তবে এর প্রভাব নিয়ে এখনও বিস্তারিত জানানো হয়নি।
শুক্রবার আবহাওয়া দপ্তরের আপডেট-
২৬ সেপ্টেম্বর- দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের বিক্ষিপ্ত অংশে, ভারী বৃষ্টিপাতের (০৭-১১ সেমি) সম্ভাবনা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক বা দুটি স্থানে বজ্রপাত, দমকা হাওয়া (৪০-৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে) হতে পারে। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রপাত, এবং দমকা হাওয়া (৩০-৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে) হতে পারে।
২৭ সেপ্টেম্বর- সমস্ত জেলার বেশিরভাগ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি/বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের এক বা দুটি জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাত (০৭-১১ সেমি) হতে পারে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক বা দুটি জায়গায় বজ্রপাত, এবং দমকা হাওয়ার (৪০-৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে) সম্ভাবনা এবং দক্ষিণ বাংলার বাকি জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রপাত, এবং দমকা হাওয়া (৩০-৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে) হতে পারে।
২৮ সেপ্টেম্বর- উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা।
সোমবার, সপ্তমীতে (২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া মহানবমীর (১ অক্টোবর, ২০২৫) রাত থেকে ও দশমীর (২ অক্টোবর, ২০২৫) দিন আবহাওয়ার কিছুটা অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উত্তরবঙ্গের আবহাওয়ার পূর্বাভাস:তবে সুখবর বাংলার উত্তরের জেলাগুলির জন্য। উত্তরবঙ্গে আপাতত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। দার্জিলিং-সহ উত্তরের পাঁচ জেলাতে বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। নবমী পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টি হতে পারে।
আজ, শুক্রবার থেকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে।
শনিবার ভারী বৃষ্টি হতে পারে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে। উত্তরের বাকি জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি চলবে সোমবার পর্যন্ত।
সোমবার মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো উত্তরবঙ্গের দক্ষিণের জেলাগুলিও ভিজবে।
কলকাতার আবহাওয়া-
কলকাতায় জারি হয় কমলা সতর্কতা। আজও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে শহরে। কলকাতায় আগামী দু'দিন রোদের দেখা মিললেও মাঝে মাঝে মেঘলা আকাশ থাকবে এবং বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হতে পারে।
আজ, শুক্রবার মহানগরে সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ৩২ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর কাছাকাছি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাতাসে আপেক্ষিক আদ্রতার সর্বোচ্চ পরিমাণ ৯৫% শতাংশ ও সর্বনিম্ন ৬৫ শতাংশের আশপাশে থাকবে।