• বি‌দ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙায় শাহর বিরুদ্ধে থানায়, পুজো উদ্বোধনের মঞ্চে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশে সেই ব্যক্তিই!
    প্রতিদিন | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার: শুক্রবার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপুজোর উদ্বোধন মঞ্চে অমিত শাহের চারপাশে দেখা গেল রাজ্য বিজেপি নেতাদের। সেই ভিড়ে এমনই একজন ছিলেন, যিনি ২০১৯-এর ১৪ মে বি‌দ‌্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় প্ররোচনার দায়ে শাহের বিরুদ্ধেই আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ করেছিলেন!

    কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মঞ্চে বিজেপি নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমনই চাঞ্চল‌্যকর তথ‌্য দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ‌্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর কটাক্ষ, “অমিত শাহ আজ যে মঞ্চ থেকে পুজো উদ্বোধন করলেন, সেটাও তো ভঙ্গুর। ওখানে আদি বিজেপি কোথায়, সবই তো তৎকাল বিজেপির। কিছুদিন আগেও এঁদের অধিকাংশই তৃণমূল কংগ্রেস করতেন। এখন নানা কারণে কয়েকদিন বিজেপি করছেন। সবচেয়ে বড় কথা, আজ ওখানে এমন একজন বসেছিলেন যিনি ২০১৯-র ১৪ মে লোকসভা নির্বাচনে শাহর র‌্যালি থেকে বিদ‌্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার দায়ে তাঁর নামেই আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। শুধু তাই নয়, পরে টানা কয়েকদিন উনি শাহের গ্রেপ্তারের দাবিতে মিছিল-মিটিংও করেন! বাকিটা আপনারা বুঝে নিন।”

    কুণাল সেই ব্যক্তির নাম করেননি, তবে এমন বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য বিজেপির অভ‌্যন্তরেও তুমুল আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। শাহের বিরুদ্ধে এফআইআর করা ওই নেতাকে কেন মঞ্চে জায়গা দেওয়া হল, সরাসরি ‘তৎকাল বিজেপি’ নেতাদের বিরুদ্ধে এই প্রশ্ন তুলেছেন আদি বিজেপি নেতারা। যদিও ওই নেতাকে মঞ্চে নিয়ে বসানোর উদ্যোক্তাদের সবারই মুখে কুলুপ।

    দুর্গাপুজোর সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির কোনও আত্মিক সম্পর্ক নেই এবং গেরুয়া শিবির মাত্রই বাংলা বিরোধী বলে উল্লেখ করে এদিন রাজ্যের মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা ও কুণাল পদ্ম শিবিরকে তীব্র আক্রমণ করেন। ডাঃ পাঁজা বলেন, “একসময় এরাই বলতেন, বাংলায় দুর্গাপুজো করতে দেওয়া হয় না। এখন যেই মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের উদ্যোগে ইউনেস্কো হেরিটেজ তকমা দিল, যেই পুজোর অর্থনীতি বদলে দিল বাংলার আর্থিক মানদণ্ড, তখনই রাজনীতির ঘোলা জলে মাছ ধরতে এলেন বিজেপি নেতারা।”

    তবে বাংলার গেরুয়া জনপ্রতিনিধিরা পুরোপুরি জনবিচ্ছিন্ন বলে তোপ দেগে কুণালের দাবি,  “বাংলার বিজেপি সাংসদ বা বিধায়করা কেউই একটি পুজোর সঙ্গেও যুক্ত নেই। পাড়ায় কারও সঙ্গে মেশেন না, এলাকার ক্লাব বা পুজো কমিটির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখেন না। আসলে এরা বিভেদের রাজনীতি করেন, জনবিচ্ছিন্ন বলেই এঁদের কোনও পুজো নেই।”

    তৃণমূল কোনও মাঠে পুজো করতে দেয় না বলে বিজেপির অভিযোগের পালটা কুণালের প্রশ্ন, “একটা মাঠ বা পুজো কমিটির নাম বলুন, যেখানে বিজেপি নেতাদের মাঠ দেওয়া হয়নি? একটা পুজো কমিটির নাম বলুন, যারা কোনও থানায় বা কোনও বিডিও-এসডিও অফিসে অভিযোগ করেছেন? এই তো আজ যে পুজোর উদ্বোধন হল সেই সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার, যেখানে আগে যিনি তৃণমূল করতেন এখন তিনি বিজেপি করছেন, সেখানেও তো পুজো হচ্ছে। কই কেউ তো বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেননি? আসলে বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা সবাই জনবিচ্ছিন্ন।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)