নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: আট ঘণ্টা ধরে পুজো পরিক্রমা ৩৭ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধার। শুক্রবার চতুর্থীতে তাঁরা দু’টি বাসে শিলিগুড়ি শহরের পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে যান। উপভোগ করেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সাইড সিন। আলো ঝলমলে শহরের দৃশ্য। সেইসঙ্গে ছিল টিফিন ও ডিনার। মেনুতে বাসন্তী পোলাও, পনির বাটার মশলা, চিপস ও স্যালাড। ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিয়ে এমন আয়োজন করে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম। এতে উচ্ছ্বসিত ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। আজ পঞ্চমীতেও এনবিএসটিসি’র এমন আয়োজন রয়েছে।
এনবিএসটিসি’র চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় বলেন, নাগরিকদের দাবি মেনেই এমন আয়োজন। এতে নিগমের আয় যেমন হয়েছে, তেমনই বয়স্করাও বাসে চেপে সুষ্ঠুমতো উল্লেখযোগ্য পুজো মণ্ডপ, প্রতিমা, আলোকসজ্জা দেখতে পারলেন।
এদিন সন্ধ্যায় শহরের তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস থেকে পুজো পরিক্রমার সূচনা করা হয়। নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব ঘোষণা অনুসারে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে টার্মিনাসে জড়ো হন বয়স্করা। সাড়ে ৬টা নাগাদ তাঁদেরকে দু’টি বাসে চাপিয়ে পুজো পরিক্রমা করানো শুরু হয়। যারমধ্যে একটি এসি, আরএকটি নন এসি বাস। দু’টিই ৩০আসন বিশিষ্ট। ননএসি বাসে মাথাপিছু ভাড়া ৫০০ টাকা এবং এসি বাসে মাথাপিছু ভাড়া ৭০০ টাকা করে। এদিন এসি বাসে ১৮ এবং ননএসি বাসে ১৯ জন যাত্রী হয়। কয়েকজন বয়স্ক নাগরিকের সঙ্গে তাঁদের নাতি-নাতনিরা ছিল। সমগ্র বিষয় তদারকি করেন নিগমের শিলিগুড়ির ডিভিশনাল ম্যানেজার সৌভিক দে।
এনবিএসটিসি’র এক অফিসার বলেন, টার্মিনাস থেকে বাস দু’টি প্রথমে চম্পাসরিতে যায়। সেখানকার উল্লেখযোগ্য পুজো মণ্ডপগুলি পরিক্রমা করার পর সিটি সেন্টার, মাটিগাড়া হয়ে বাস দু’টি বর্ধমার রোডে প্রবেশ করে। সেখান থেকে এনজেপির সেন্ট্রাল কলোনি, দেশবন্ধুপাড়ার দাদাভাই স্পোর্টিং ক্লাব, সুব্রত সংঘ হয়ে সুভাষপল্লি, রথখোলা, সেভক রোডের বিভিন্ন মণ্ডপ দেখায়। মাঝে সুব্রত সংঘে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ ছিলেন ওই দর্শনার্থীরা। এভাবেই রাত আড়াইটে পর্যন্ত চলে পুজো পরিক্রমা। শেষ হয় টার্মিনাসে এসে। মাত্র আট ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের দেখানো হয়েছে উল্লেখযোগ্য ১৫টি মণ্ডপ ও প্রতিমা।
সফর শুরুর সময়ই বয়স্কদের চা ও প্যাটিস খাওয়ানো হয়। রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে তাঁদের দেওয়া হয় ডিনার। মেনুতে বাসন্তী পোলাও, বাটার পনির মশলা, চিপস ও স্যালাড ছিল। সরকারি পরিবহণ সংস্থার এমন আয়োজনে উচ্ছ্বসিত বয়স্করা। তাঁদের কয়েকজন বলেন, ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত প্রতিটি মণ্ডপে ব্যাপক ভিড় হয়। ভিড় ঠেলে হেঁটে মণ্ডপ ও প্রতিমা দর্শন করার মতো ক্ষমতা শরীরে নেই। তাই পরিবারের সদস্যদের উদ্যোগে পঞ্চমীর রাতে বাসে চেপে প্রতিমা দর্শন করলাম। সেই সঙ্গে রাতের শহরের ছবি দেখেও মুগ্ধ। এসএফ রোড, বর্ধমান রোড, সেভক রোড, হিলকার্ট রোডের আলো ঝলমলে রূপ দেখে খুব ভালো লেগেছে। শহরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তবে রাস্তাঘাটের আরএকটু উন্নতি করতে হবে।