ভিডিও কলের পর তরুণী আত্মঘাতী! নয়া প্রতারণা, ‘সুইসাইড নোটে নাম’, ছবি দেখিয়ে টাকা দাবি
বর্তমান | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
অলকাভ নিয়োগী, বিধাননগর: ফেসবুকে অল্পদিনের বন্ধুত্ব। তারপর একদিন হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চেয়ে মাঝরাতে ভিডিও কল। এপর্যন্ত সব স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু, হঠাৎ সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ অফিসারের ফোন! ‘যে তরুণীর সঙ্গে কথা বলেছেন, তিনি ভিডিও কলের পরই আত্মঘাতী হয়েছেন। সুইসাইড নোটে লিখে গিয়েছেন আপনার নাম। রুজু হয়েছে মামলা। সাজা হবে ১৪ বছরের জেল!’ তরুণীর মৃতদেহের ছবিও পাঠাচ্ছেন পুলিশ অফিসার। তাতে ভয় পেয়ে ‘আন্ডার টেবিল’ রফা করতে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে ফেলছেন অনেকেই। সম্প্রতি এমনই অভিনব কায়দায় শুরু হয়েছে সাইবার প্রতারণা। ওই পুলিশ অফিসার যে ভুয়ো তা বলাই বাহুল্য। ছদ্মবেশেই ফাঁদ পাতছে প্রতারকরা। বেছে বেছে টার্গেট করা হচ্ছে প্রৌঢ় এবং প্রবীণ নাগরিকদেরই।
চলতি মাসেই এই নয়া কায়দার জালিয়াতির শিকার হয়েছেন মধ্যমগ্রামের ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ। তিনি প্রথমে লালবাজারে যান। পরে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানাতেও অভিযোগ করেন। ফেসবুকে এক তরুণী ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ পাঠিয়েছিল তাঁকে। সেটি রিসিভ করার এক সপ্তাহের মাথায় হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কল আসে। ওই বৃদ্ধ কল কেটে, নম্বর ব্লকও করেন। তারপর থেকেই তাঁর কাছে ফোন আসে দিল্লি পুলিশের সাইবার সেলের নাম করে। বলা হয়, আপত্তিকর ভিডিও কল নিয়ে মামলা হয়েছে। তা মেটানোর জন্য প্রথমে ৬০ হাজার, পরে দেড় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা।
তারপর ফের ফোন করে বলা হয়, ওই তরুণী সুইসাইড নোটে আপনার নাম লিখে আত্মঘাতী হয়েছেন। তরুণীর মৃতদেহের ভুয়ো ছবিও পাঠানো হয়। সেই কেস মেটাতে বৃদ্ধ আরও ৭ লক্ষ টাকা দিয়ে দেন। পরে বুঝতে পারেন, এটি প্রতারণা চক্র। পুলিশের দাবি, কোনও অপরিচিতর সঙ্গে রাতে ভিডিও কল করবেন না। এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হলে প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিন। কারণ, ভয় পেলেই প্রতারকদের ফাঁদে পড়বেন।