বন্ধ ঘরে মা ও ছেলের নলি কাটা দেহ উদ্ধার, খুন নাকি আত্মহত্যা? বীরভূমের সাঁইথিয়ায় চাঞ্চল্যকর ঘটনা ...
আজকাল | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বীরভূম জেলার সাঁইথিয়ার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটল চাঞ্চল্যকর ঘটনা। একটি বন্ধ বাড়ি থেকে উদ্ধার হলো মা ও ছেলের রক্তাক্ত মৃতদেহ। মৃতদের পরিচয় জানা গিয়েছে। মায়ের নাম বানি রায়, আর ছেলের নাম জ্যোতির্ময় রায়। জ্যোতির্ময় স্থানীয়ভাবে কাঠের কাজ করতেন। তবে পুলিশ সূত্রে খবর মিলেছে, কাজের অনিয়মিত আয় ও ব্যবসার মন্দার কারণে তাঁর বাজারে প্রচুর ধার দেনা হয়ে গিয়েছিল। সেই আর্থিক চাপে থেকেই এমন মর্মান্তিক পরিণতি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, শেষবার তাঁরা মা ও ছেলেকে দেখেছিলেন গতকাল বিকেলে। আজ সকাল থেকে বাড়ির ভেতর কোনও সাড়া-শব্দ না পেয়ে সন্দেহ হয়। বারবার দরজায় কড়া নাড়ার পরও কোনও সাড়া না মেলায় জানালা দিয়ে উঁকি দেন কয়েকজন প্রতিবেশী। তখনই তাঁদের চোখে পড়ে রক্তাক্ত দেহ। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় স্থানীয় থানায়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে এবং মা-ছেলের গলার নলি কাটা দেহ উদ্ধার করে।
এরপর মৃতদেহ দুটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। একইসঙ্গে আত্মহত্যা না কি এর পিছনে অন্য কোনও অপরাধমূলক যোগ রয়েছে, সেই দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও আপাতত পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, অর্থনৈতিক চাপে জ্যোতির্ময় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন এবং সেই কারণেই কার্যত এহেন চরম পদক্ষেপ ।
ঘটনার জেরে এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। বানি রায়কে সবাই শান্ত-সরল মহিলা হিসেবেই চিনতেন। প্রতিবেশীরা বলছেন, তিনি ছেলের দুঃসময়ে তাঁকে ভরসা জুগিয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু শেষরক্ষা আর হলো না। অনেকেই মনে করছেন, গ্রামীণ জীবনে কাজের অনিশ্চয়তা, বেকারত্ব এবং ঋণের বোঝা পরিবারগুলোকে মারাত্মক মানসিক চাপে ফেলছে। তারই ভয়াবহ প্রতিফলন এই ঘটনা।
মনোবিজ্ঞানীদের মতে, ধার-দেনা বা আর্থিক সমস্যার জেরে আত্মহত্যা প্রবণতা বেড়ে যাওয়া গ্রামীণ ও ছোট শহরাঞ্চলে এখন নতুন চ্যালেঞ্জ। প্রয়োজন আর্থিক নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো।
পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে। তবে মা ও ছেলের এই করুণ পরিণতি স্থানীয় সমাজে আবারও প্রশ্ন তুলেছে- কেবল ব্যক্তিগত দায় নাকি এর পিছনে বৃহত্তর সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকট কাজ করছে?
প্রসঙ্গত, বান্দোয়ানের লতাপাড়া গ্রামের আর একটি ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য, প্রবল আতঙ্ক স্থানীয়দের মধ্যে। সূত্রের খবর, ভিন রাজ্যে সবজি বিক্রির কাজ করতেন মৃত মহিলার স্বামী। বৃহস্পতিবার তিনি যখন বাড়ি ফেরেন, দেখেন তাঁর তিন কন্যা এবং স্ত্রী অচৈতন্য অবস্থায় ঘরের মেঝেয় পড়ে। তৎক্ষণাৎ মৃত মহিলার স্বামী সঙ্গে সঙ্গে পাড়ার লোকজনদের খবর দেন এবং তাঁদের বান্দোয়ান ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করে তাঁদের।
শুক্রবার নাবালিকা কন্যা এবং মৃত মহিলা, চারজনকে পুরুলিয়ার সরকারি দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় ময়নাতদন্ত করার জন্য। জানা গিয়েছে, ওই যুবকের নাম আনন্দ গড়াই, প্রতিদিন সবজি বিক্রি করে পাঁচজনের এই সংসার চালাতেন।
বাড়িতে থাকতেন তিন কন্যা এবং আনন্দ গড়াইয়ের স্ত্রী। আনন্দ গড়াই প্রতিদিনের মতন বৃহস্পতিবারও সবজি বিক্রি করে রাতে যখন বাড়ি ফেরেন এবং বাড়ি ফিরে দেখেন, তাঁর স্ত্রী প্রিয়া গড়াই এবং তিন মেয়ে বৈশাখী গড়াই (১২), পল্লবী গড়াই (১০) ও সৌরভী গড়াই (৬), অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। পরে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বান্দোয়ানের বান্দোয়ানের লতাপাড়া পাড়া গ্রামে এই পুজোর মরশুমে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যাওয়াতে এলাকাবাসী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
দিন কয়েক আগেই, অসমে এই ধরনের এক ঘটনা সামনে আসে। বাড়ির মধ্যে থেকে উদ্ধার হয় এক পরিবারের সকল সদস্যের মৃতদেহ। ওই পরিবারের তিনজন সদস্যের মৃতদেহ উদ্ধারকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। পাশাপাশি দম্পতির ১৩ বছরের সন্তানের দেহটি টুকরো টুকরো অবস্থায় পাওয়া যায় বাড়ির মধ্যে থেকেই। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছে অসমের দারাং জেলায়। সিপাঝাড় থানার অন্তর্গত নরকালী মন্দিরের অদূরেই এই বাড়ি থেকে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৫৫ বছরের দীপক নাথের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে ওই বাড়ির পাঁচিলের পাশ থেকে। তাঁর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না।