• সোনার বিহার-উত্তরপ্রদেশ হয়েছে? শাহকে নিয়ে খোঁচা অভিষেকের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২০১৯-এর পর ২০২৫, বঙ্গ রাজনীতির দুই প্রধান প্রতিপক্ষের সংঘাতের কেন্দ্রে বাংলার সেই মনীষী, যাঁর মূর্তি ভাঙতে দু’বার ভাবেনি বিজেপি! সেই ঘটনার ছ’বছর পেরিয়ে গিয়েছে, ফের বিদ্যাসাগর ইস্যুতে মুখোমুখি দুই দল। শুক্রবার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিদ্যাসাগর কলেজে তাঁর মূর্তিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, এদিন সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যার-সহ দুই দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে কলকাতায় এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

    তবে বাংলায় এসেও বিদ্যাসাগরের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন না শাহ। এ প্রসঙ্গেই অভিষেকের কটাক্ষ, ‘তাঁর ন্যূনতম মানবিকতা নেই! দশ মিনিট দূরত্বে কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিয়েছেন। কিন্তু বিদ্যাসাগরকে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন না। এই জন্যই বিজেপি বাংলা-বিরোধী।’ সাংসদের স্মৃতিচারণা, ‘২০১৯ সালে এই দিনেই কলকাতাকে জল্লাদদের উল্লাসভূমিতে পরিণত করে তাণ্ডব চালিয়েছিল বিজেপি! দুর্গাপুজো নিয়ে মিথ্যাচার করা বিজেপিকে সেই পুজোর উদ্বোধনেই বাংলায় আসতে হচ্ছে? ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক হেরিটেজের তকমা পেয়েছে বাংলার দুর্গাপুজো।’

    এরপর বীরভূমের গর্ভবতী মহিলা সোনালি বিবিকে বাংলাদেশি সন্দেহে পুশব্যাকের ঘটনা মনে করান অভিষেক। তাঁর ভাষায়, ‘পুশব্যাকের ঘটনায় হাই কোর্টে থাপ্পড় খেয়েছে বিজেপি। সংশ্লিষ্ট পরিবারকে ভারতে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে যেভাবে মূর্তি ভাঙা হয়েছিল এবং এ যাবত বাংলার প্রতি যে অন্যায়-অবিচার হয়েছে তার জন্য অমিত শাহের উচিত বিদ্যাসাগরের মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাওয়া।’

    সেই সঙ্গে বাংলার মনীষীদের স্মৃতি সংরক্ষণে রাজ্য সরকারের উদ্যোগের খতিয়ান তুলে সাংসদ বলেন, ‘আমি গর্বিত, বিদ্যাসাগরের ভূমিতে জন্মেছি। আমাদের সরকার তাঁর জন্মভিটেকে সংরক্ষণ করে যাবতীয় সৌন্দর্যায়ন করেছে। এঁদের ভুলে গেলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না। তাই মনীষীদের অবদান রাজ্য সরকার সংরক্ষণ করে আগামী প্রজন্মকে জানার সুযোগ করে দিচ্ছে।’

    উল্লেখ্য, পুজোর উদ্বোধনে এসে ‘সোনার বাংলা’ গড়ার আশা প্রকাশ করেছেন শাহ। পাল্টা অভিষেকের কটাক্ষ, ‘বাংলার প্রায় ২ লক্ষ কোটি বকেয়া টাকা আগে ছাড়ুন। কোন অধিকারে তা আটকে রেখেছেন? বিহার, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশে বারংবার রাস্তা, ব্রিজ ইত্যাদি ধসে যাচ্ছে! সোনার বিহার-উত্তরপ্রদেশ হয়েছে? উত্তরপ্রদেশের বিজ্ঞাপনে বাংলার ব্রিজ দেখানো হয়। সোনার উত্তরপ্রদেশে একটা ব্রিজ বানানো গেল না?’ কলকাতার ভয়ানক প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়েও রাজ্য সরকারকে বিঁধেছে বিজেপি।

    কটাক্ষের তীর ছুঁড়ে অভিষেকের স্পষ্ট প্রশ্ন, ‘পাঁচ ঘন্টায় ৩০০ মিমি বৃষ্টি হলে জল জমবেই। তবে কলকাতার নিকাশি ব্যবস্থা যদি বেহাল হতো, তাহলে অমিত শাহ কলকাতায় সড়ক পথে ঘুরছেন কীভাবে?’ এদিন ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ নিয়েও বিজেপির কুৎসার জবাবে সাংসদ বলেন, ‘অন্নপূর্ণা ভান্ডার দেবেন? বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলির মধ্যে অন্তত একটায় করে দেখান। বাঙালি ব্রিটিশদের মাথা নত করিয়েছে। অমিত শাহ কে? আপনার কাছে আছে শুধু ইডি-সিবিআই। তৃণমূলের কাছে আছে জনসমর্থন।’ এদিন অভিষেকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, যুবনেত্রী শ্রেয়া পান্ডে প্রমুখ।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)