রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষক, কর্মচারীদের পেনশন ও অবসরকালীন সুবিধার বিষয়টি কার্যত রাজ্য সরকারের তরফে সরাসরি নিয়ন্ত্রণের বন্দোবস্ত করতে এ বার সব বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে চিঠি দিল উচ্চ শিক্ষা দফতর। পেনশনভোগী কর্মচারী, কর্মচারীর পরিজন এবং ছ’মাসের মধ্যে অবসর নিচ্ছেন এমন কর্মচারীদের পেনশন, গ্র্যাচুইটি সংক্রান্ত নথি, আসল সার্ভিস বুক সব খতিয়ে দেখে তা কতটা যথাযথ নির্ধারণ করবে ডিরেক্টরেট অব পেনশন অ্যান্ড প্রভিডেন্ট ফান্ডস (ডিপিপিএস)। এ বিষয়ে সহযোগিতা না করলে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর পেনশন, প্রাপ্য সুবিধার বরাদ্দ ছাড়া হবে না বলে উচ্চ শিক্ষা দফতরের এক ডেপুটি সেক্রেটারির নির্দেশিকায় বলা হয়েছে।
এই ব্যবস্থা কার্যকর হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বায়ত্তশাসন বিপন্ন হবে বলে আশঙ্কা নানা মহলের। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “শিক্ষক, কর্মচারীর পেনশন, অবসরকালীন সুবিধা আটকে রাজনৈতিক শত্রুতাও কেউ মেটাতে পারেন।” এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের সভাপতি শুভেন্দু মুখোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে তিনি বলছেন, “কোনও কর্মীর অবসরের ছ’মাস আগে সব নথি দিতে বলা হলেও কত দিনে তাঁর পেনশন, গ্র্যাচুইটি ডিপিপিএস নির্ধারণ করা হবে তা বলা নেই। তত দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে তিনি তিন-চতুর্থাংশ পেনশন, গ্র্যাচুইটি পাবেন। এটা সমস্যার।” গত জুলাইয়ে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় কর্মীদের সার্ভিস বুকের তথ্য চায় রাজ্য। ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয় তাতে সাড়া দিলেও যাদবপুর, কলকাতার সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। পুজোর পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়ে ক্ষোভ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে শুভেন্দু মনে করাচ্ছেন, বাম আমলেই প্রথম কর্মচারীদের পেনশন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু হয়। যা সফল হয়নি। পেনশনে দখলদারি আসলে এইচআরএমএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে সব বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার অঙ্গ বলেই শিক্ষক, কর্মচারীদের একাংশের মত। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কর্মীর পেনশনে বেনিয়ম নিয়ে আগেও অভিযোগ উঠেছে। তা-ও গুরুতর বলে সংশ্লিষ্ট মহলের কারও কারও অভিমত।