কলকাতায় আবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু, এ বার বেহালা! জমা জলে দাঁড়িয়ে দোকানের শাটার খুলতে যেতেই তড়িদাহত বৃদ্ধা
আনন্দবাজার | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কলকাতায় আবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু! আবার কাঠগড়ায় রাস্তার জমা জল! এ বার ঘটনাস্থল বেহালা-সরশুনা এলাকা। শনিবার পঞ্চমীর সকালে সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৬৬ বছর বয়সি এক বৃদ্ধার। দোকানের শাটার খুলতে গিয়ে তিনি তড়িদাহত হন বলে খবর। সেই সময় রাস্তায় জমে ছিল জল। জমা জলের উপর দাঁড়িয়েই তিনি দোকানের শাটার খোলার চেষ্টা করছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম শ্রাবন্তী দেবী। সরশুনার ক্ষুদিরাম পল্লির তালপুকুর রোডের বাসিন্দা তিনি। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ দোকান খুলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দোকানের শাটার তুলতে পারেননি। ধাতব শাটারে হাত দিতেই তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশ এবং এলাকায় বিদ্যুৎ বন্টনকারী সংস্থা সিইএসসি-কে খবর দেন। তারা ঘটনাস্থল থেকে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে। তাঁকে নিকটবর্তী বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা বৃদ্ধাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সিইএসসি-র বক্তব্য, দোকানের ছাদের টিনের শেডে একটি আলো লাগানো হয়েছিল। সেই আলোর তার ঠিকমতো ছিল না। বিদ্যুৎবাহী সেই তারের কারণেই বৃদ্ধা তড়িদাহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখার পর এ কথা জানিয়েছেন সিইএসসি কর্তৃপক্ষ।
গত সোমবার রাতে প্রবল বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল কলকাতা। মঙ্গলবার সকাল থেকে শহরের বিস্তীর্ণ অংশ জলমগ্ন ছিল। বৃষ্টি এবং জমা জলের বলি হয়েছেন মোট ১০ জন। নেতাজিনগরে এক ফলবিক্রেতা জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। বাড়ি থেকে মাত্র ৭০০ মিটার দূরে মৃত্যু হয় তাঁর। জমা জলে দাঁড়িয়ে রাস্তার লাইটপোস্টে হাত দিয়েছিলেন তিনি। ওই ফলবিক্রেতার সঙ্গে একটি কুকুরও মারা যায় একই ভাবে। দু’টি নিথর দেহ দীর্ঘ ক্ষণ জলমগ্ন রাস্তায় পড়ে ছিল। পরে সিইএসসি এবং দমকল পৌঁছে দেহ উদ্ধার করে। সমাজমাধ্যমে সেই দৃশ্য দেখে শিউড়ে উঠেছিলেন অনেকেই। তার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার অনুরূপ ঘটনা।
সূত্রের খবর, সোমবারের বৃষ্টির পর বেহালায় যে জল জমেছিল, তা অনেক জায়গায় নেমে গেলেও এখনও কিছু কিছু রাস্তায় জল রয়ে গিয়েছে। সরশুনার কিছু রাস্তাও সেই থেকে জলমগ্ন। জল পেরিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের কাজ করতে হচ্ছে। শনিবার যে জলে দাঁড়িয়ে দোকান খোলার চেষ্টা করেছিলেন বৃদ্ধা, সেই জলে বিদ্যুতের কোনও সংস্পর্শ ছিল না। দোকানের শাটারে বিদ্যুতের সংযোগ ঘটেছিল। তবে জলের উপর দাঁড়িয়ে থাকায় তড়িৎ প্রবাহ আরও দ্রুত হয়েছে, দাবি এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের।