• সোনম হোক বা অমৃতপাল, কেন ঝামেলা সৃষ্টিকারীদের গ্রেপ্তারের পর শত শত কিলোমিটার দূরে নিয়ে রাখা হচ্ছে?...
    আজকাল | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাঞ্জাব থেকে অসমের ডিব্রুগড়। লেহ থেকে রাজস্থানের যোধপুর। গ্রেপ্তারের পর দুই ঝামেলা সৃষ্টিকারী, অমৃতপাল সিং এবং সোনম ওয়াংচুকের ভাগ্যে এই পরিণতি ঘটেছে। জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের পর তাঁরা দু’জনেই দীর্ঘ সময় ধরে আটক রয়েছেন। কিন্তু কেন এত কঠোর পদক্ষেপ? কেন্দ্রের পরিকল্পনা সহজ। সরকারি সূত্রের দাবি, নাগরিক অস্থিরতা উস্কে দেওয়া এবং তা করার জন্য অতিরিক্ত সম্পদ থাকা একটি বড় বিপদের কারণ। সূত্রের আরও দাবি, এই ধরনের উপাদানগুলিকে তাদের আস্তানা থেকে সরিয়ে দূরে নিয়ে যাওয়া উচিত।

    দুই বছর আগে অমৃতপাল সিং পাঞ্জাবে বিচ্ছিন্নতাবাদী যুবকদের উস্কে দিয়ে, পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং আইএসআই-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে তিনি এক মাস ধরে এজেন্সিগুলিকে ফাঁকি দিয়েছিলেন। সরকার তাঁকে পাঞ্জাব থেকে প্রায় ৩,০০০ কিলোমিটার দূরে দেশের অন্য সীমান্তে- আসামের ডিব্রুগড় জেলে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত দুই বছর ধরে এটিই তাঁর ঠিকানা।

    ডিব্রুগড় জেলও খুবই নিরাপদ। কেন্দ্রের ধারণা ছিল অমৃতপালকে পাঞ্জাবের জেলের অন্যান্য বন্দিদের থেকে দূরে রাখা। কারণে, সেই জেলে তিনি হয়তো অন্যান্য বন্দিদের উস্কে দিয়েছিলেন। এটা আলাদা বিষয় যে, কারাগারের আড়ালে থেকেও তিনি লোকসভা নির্বাচনে পাঞ্জাব থেকে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্র পাঞ্জাবের মতো সংবেদনশীল রাজ্যে তাঁর খালিস্তানি বক্তব্য যেন বেশি ছড়িয়ে না পড়ে তা আটকাতে চাইছে। 

    সোনম ঘটনাটি অমৃতপাল সিংয়ের পুনরাবৃত্তি বলে মনে হচ্ছে। ওয়াংচুককে লেহ থেকে ১,৫০০ কিলোমিটার দূরে দেশের অন্য সীমান্তে- রাজস্থানের যোধপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনিও এনএসএর মুখোমুখি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলিও অমৃতপাল সিংয়ের মতো। ওয়াংচুককে লেহ-র হিংসায় প্ররোচনার দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কয়েক দশক ধরে এটি শান্তিপূর্ণ অঞ্চল ছিল। কেন্দ্র একটি বিবৃতিতে তাই বলেছে। তাঁর আর্থিক লেনদেন এবং তাঁর এনজিওতে সন্দেহজনক অর্থপ্রদানও তদন্তের আওতায় রয়েছে। এর ফলে তাঁর এনজিওর জন্য এফসিআরএ ছাড়পত্র বাতিল করা হয়েছে।

    লেহ থেকে ওয়াংচুককে সরিয়ে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে শান্তি লঙ্ঘিত হচ্ছে মাঝে মধ্যেই। গ্রেপ্তারির আগে সোনম শুক্রবার লেহতে আরও একটি সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছিলেন। কেন্দ্র মনে করেছিল যে লেহ-তে সোনমের উপস্থিতি আবারও উত্তেজনা বাড়াতে পারে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি চীন সীমান্তের কাছে একটি সংবেদনশীল এলাকা এবং কেন্দ্র এখানে কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না।

    রাজস্থানের যোধপুর জেলকে পছন্দের কারণ এর নিরাপত্তা। লরেন্স বিষ্ণোই, আসারাম এবং অভিনেতা সলমান খানের মতো হাইপ্রোফাইল বন্দিদের এখানে রাখা হয়েছে। ওয়াংচুক এখন এনএসএ-র অধীনে আটক থাকার সময় এখানে অনেক দিন থাকতে হতে পারে তাঁকে। আদালতেও দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে চলেছেন তিনি। কেন্দ্র মনে করে যে ওয়াংচুককে লেহ থেকে বের করে আনার ফলে অঞ্চলটি শান্ত হওয়ার এবং অঞ্চলের প্রকৃত হিতৈশীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য একটি গঠনমূলক পরিবেশ তৈরি করার সময় পাওয়া যাবে। 

    অমৃতপাল হোক বা সোনম, দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা ব্যক্তিদের সহ্য করার মানসিকতা কেন্দ্রের নেই।
  • Link to this news (আজকাল)