দর্শকদের জন্য এখনো খোলা হয়নি দেশপ্রিয় পার্ক দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল...
আজকাল | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দেশপ্রিয় পার্ক দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল দর্শনার্থীদের জন্য এখনও খোলা হয়নি। দেশপ্রিয় পার্কের কর্মকর্তা সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত কুমার আজকে দেশপ্রিয় পার্কের সাধারণ দর্শকদের জন্য পুজো পরিক্রমা বন্ধ রাখার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, "তেমন বিশেষ কোন বিষয় নয়, মন্ডপের বেশ কিছু কাজের জন্য আজকে সন্ধ্যেবেলার দিক বন্ধ রাখা হয়েছে সাধারণ দর্শকদের জন্য। কারণ বৃষ্টির কারণে মাঠ পুরো কাঁদা হয়ে গেছে এবং বেশ কিছু অংশ বৃষ্টির কারণে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
সেগুলো মেরামতের জন্য এবং মাঠের কাঁদা হয়ে যাওয়ার জন্য তাকে মেরামত এবং দর্শকদের আগমনে যাতে কোনরকমের সমস্যা না হয় অর্থাৎ তাদের যাতে কোন রকম সমস্যায় না পরতে হয় সেই কারণেই আজকের দিনটা বন্ধ রেখে সমস্ত মেরামতের কাজ চলছে। আগামীকাল থেকে যথারীতি অন্য দিনের মতোই সমস্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে। যাতে কোন রকম দর্শকদের অপ্রীতিকর অবস্থায় না করতে হয় বা সমস্যায় না পরতে হয় তাই জন্যই কিছু মেরামতের কাজ চলছে এবং তা খুব শীঘ্রই আজকের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যাবে।"
ঠিক দশ বছর আগে, ২০১৫ সালে দেশপ্রিয় পার্ক দুর্গাপুজো কমিটি ‘পৃথিবীর সবথেকে বড় দুর্গা’ তৈরি করে নজর কেড়েছিল। নয়তলা বাড়ির সমান সেই প্রতিমা লিমকা বুক অব রেকর্ডসে নাম তুলেছিল। তবে অতিরিক্ত জনসমাগম সামাল দিতে না পেরে মাঝপথেই বন্ধ করে দিতে হয়েছিল মণ্ডপ। সেই স্মৃতিই আবার উসকে দিচ্ছে এবারের পুজো। কারণ ২০২৫ সালে ৮৮তম বর্ষে দেশপ্রিয় পার্ক দুর্গাপুজো কমিটি নিয়ে এসেছে নতুন চমক—পৃথিবীর সবথেকে বড় দুর্গাপুজো মণ্ডপ।
এবার মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে থাইল্যান্ডের বজরার আদলে। প্রস্থ ১৭৫ ফুটেরও বেশি এবং উচ্চতা প্রায় সাততলা বাড়ির সমান। ভেতরে লাগানো হয়েছে ছয় ফুটেরও বেশি উঁচু ঝাড়বাতি। মণ্ডপের সাজসজ্জা হয়েছে প্রায় ৬,০০০ বর্গফুট জুড়ে। রাজমহলের মতো অভ্যন্তরীণ স্থাপত্যে নকশা খোদাই করা থাম, একাধিক মূর্তি ও কারুকাজ থাকছে। নৌকার দুই প্রান্তে ড্রাগনের মুখ প্রতীকী আকর্ষণ হিসেবে সাজানো হয়েছে।
যদিও মণ্ডপে থিমের ছোঁয়া রয়েছে, প্রতিমায় বজায় রাখা হয়েছে সাবেকি ঐতিহ্য। বিখ্যাত শিল্পী পরিমল পাল গড়েছেন এ বছরের প্রতিমা, যেখানে পুরোনো দিনের ধারাই অব্যাহত। সাবেকিয়ানা ও আধুনিকতার মিশ্রণে দর্শকদের জন্য আলাদা অভিজ্ঞতা তৈরি করতে চাইছে পুজো কমিটি।
প্রশাসনিক দিক থেকেও এবার রাখা হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। ২০১৫ সালের ভিড়-অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে কলকাতা পুলিশ ও নগরপাল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ও ভিড় নিয়ন্ত্রণে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফলে আয়োজক কমিটির দাবি, এবার আর কোনও অঘটনের সুযোগ থাকবে না।
দেশপ্রিয় পার্কের পুজো কমিটি ইতিমধ্যেই শতবর্ষ উদযাপনের পরিকল্পনা শুরু করেছে। এ বছর ৮৮তম বর্ষ, তাই আগামীর পুজোতেও ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের সমন্বয় রাখার আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আর স্বাভাবিকভাবেই, অতীতের মতো এবারও ‘সবচেয়ে বড় মণ্ডপ’ দেখতে দেশপ্রিয় পার্কে ভিড় জমাবে দর্শনার্থীদের ঢল—এমনটাই আশা করছে ক্লাবকর্তারা।