হাইকোর্টে ধাক্কা খেল কেন্দ্র। বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবিকে বাংলাদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত খারিজ করে দিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে সোনালি-সহ বীরভূমের ২ পরিবারকে ভারতে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার এক্স পোস্টে বিজেপিকে ‘বাংলা-বিরোধী’ বলে তোপ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পাশাপাশি এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপিকে বিঁধলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
ঘটনাচক্রে, এদিন পুজোর উদ্বোধনে কলকাতায় এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। স্বস্তি প্রকাশ করে অভিষেক লিখেছেন, ‘অবশেষে আইনের দীর্ঘ হাত নেমে এসেছে। বাংলা-বিরোধী জমিদার কর্তৃক চালানো এক নিষ্ঠুর ও পরিকল্পিত হয়রানির মুখোশ খুলে দিল এই রায়। এর জন্য যারা দায়ী, তাদের আমরা আদালতে, জনমত গঠনের মঞ্চে এবং নির্বাচনে জবাব চাইবো।’ প্রতিবাদের সুরে তাঁর সংযোজন, ‘বাংলার মানুষ কখনই বিদ্বেষ, অপমান কিংবা বর্জনের রাজনীতি মেনে নেবে না! ২০২৬-এ যারা ভয় ও নিপীড়নের ব্যবসা করেছে, তাদেরকে ভোটবাক্সে চূড়ান্ত জবাব দেবে বাংলার মানুষ। ন্যায়বিচারের সূচনা হয়েছে। বাংলার মানুষের মর্যাদা, অধিকার ও ভাষা রক্ষার অঙ্গীকার আমাদের অবিচল থাকবে।’
মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘মা দুর্গার আশীর্বাদে সোনালি বিবির ন্যায়বিচার হল। অমিত শাহ কলকাতায় উপস্থিত হয়ে মা দুর্গার কাছে প্রার্থনা করলেন সোনার বাংলা গড়ার। বাংলার দুর্গা তাড়িয়ে কখনও সোনার রাজ্য গড়া সম্ভব? নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ছাড়া কোনো রাজ্য সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হতে পারে না। দেবী পক্ষে মা দুর্গার রূপ ন্যায়বিচার পেয়েছেন। হাই কোর্টে আবার ধাক্কা খেল কেন্দ্র।’ সেই সঙ্গে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে অমিত শাহের দিক আঙুল তুলে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘এক অন্তঃসত্ত্বা মাকে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে কোন এক্তিয়ারে পুশব্যাক করলেন? অবৈধ অনুপ্রবেশের চিন্তা থাকলে আরও সতর্ক হন, কারণ বিএসএফ আপনারই অধীনস্থ।’
উল্লেখ্য, এদিন কলকাতায় এসে দুটি পুজোর উদ্বোধন এবং কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিয়েছেন শাহ। কটাক্ষ করে কুণালের সংযোজন, ‘একশো বার মা দুর্গার সামনে দাঁড়াবেন। তার আগে সোনালি বিবির সামনে দাঁড়ান। প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চান অমিত শাহ।
বিজেপি কতটা নারী-বিরোধী, বাংলা-বিরোধী তা ফের প্রমাণিত হল। সোনালি বিবির শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হলে, তার দায় কেন্দ্র নিত?’ পুজোর উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে ছাব্বিশের নির্বাচনের রণকৌশল নীতি নির্ধারণ করেছেন শাহ। এই ইস্যুতেই কুণাল পাল্টা বলেন, ‘বাংলায় অসুরের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না। দুর্গাপুজো নিয়ে কুৎসা করা বিজেপি সেই পুজোর উদ্বোধনেই বাংলায় আসছে!’ উল্লেখ্য, বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না, এমন অভিযোগ বিজেপির বরাবরের। কুণালের পাল্টা জবাব, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৩ হাজার পুজোর উদ্বোধন করছেন, অমিত শাহ ৩টির! এর মধ্যে আবার একটি বাদ গেল লোক হবে না বলেই। বিজেপি নেতাদের একটা পুজো নেই, এলাকা নেই, জনসংযোগ নেই। যাঁর পুজোয় গেছেন, তিনিও দু’দিন আগে তৃণমূলে ছিলেন।’