সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: বৃষ্টি আর জঙ্গল থেকে লোকালয়ে হাতিদের অবাধ যাতায়াত ? জোড়া ফলায় জঙ্গলমহলবাসীর কাছে শারদোৎসবের আনন্দ যেন আতঙ্কের। তাই দুর্গাপুজোর মধ্যে দর্শনার্থীদের সুরক্ষায় বনদপ্তরের পক্ষ থেকে হাতির দলকে নিয়ন্ত্রণ করতে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভারী বৃষ্টি ভাবনা বাড়িয়েছে। শুক্রবার দুপুর থেকে শুরু হয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে পুকুরিয়া, গিধনি, বিড়িহাড়ি এলাকায় যেসব সর্বজনীন পুজোগুলি হচ্ছে, সেইসব জায়গায় বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে বাঁশতলা এলাকাতেও নজরদারি থাকছে।
বনদপ্তরের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, হাতিদের গতিবিধি নজরে রাখতে পঞ্চাশজনের বেশি ট্র্যাকার টিমের সদস্য সর্বক্ষণ মোতায়েন থাকছেন। দ্রুত যাতায়াতের জন্য ৮টি গাড়ি সবসময় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বনদপ্তরের কর্মীদের (আপৎকালীন পরিস্থিতি ছাড়া) ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম পুজোর দিনগুলিতে নিজে সামনে থেকে হাতির গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছেন। বিগত পাঁচ বছর আগেও ঝাড়গ্রাম জেলায় বছরে গড়ে হাতির হানায় মৃত্যু ঘটত ১৫ জনের। কিন্তু বর্তমানে নিয়মিত নজরদারি এবং হাতির গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের কারণে মৃত্যুর হার অনেক কমেছে বলে জানা গিয়েছে।
বনদপ্তর সূত্রে খবর, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ২৮ জন, ২৩-২৪ অর্থবর্ষে ১৭ জন, ২৪-২৫ অর্থবর্ষে ৭ জন এবং ২৫-২৬ অর্থবর্ষে ৪ জনের (এর মধ্যে একজন বনদপ্তরের কর্মী) মৃত্যু হয়েছে হাতির হানায়। পরিসংখ্যান বলছে, হাতির হানায় ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে মৃত্যু কমেছে। তবে এবার বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পুজোর দিনগুলিতে হাতির আক্রমণ থেকে দুর্ঘটনা রোখা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের বলেই মনে করা হচ্ছে। ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, “আমরা সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। কর্মীদের ছুটি বাতিল হয়েছে। আমরা ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত রয়েছি।” বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে প্রায় কুড়িটি হাতি রয়েছে। মানিকপাড়া রেঞ্জের দিকেই প্রায় পুরো দলটি রয়েছে। একটি হাতি বিধিহাঁড়ি বিটের চাকুয়ার জঙ্গলে রয়েছে। তারা যাতে আচমকা লোকালয়ে না আসতে পারে, তার জন্য সর্বক্ষণ নজরদারি চলছে।