• ‘ওরা কাজ করে’… সাফাই কর্মীদের হাতেই পুজোর উদ্বোধন রাজপুর সার্বজনীন দুর্গোৎসবের
    প্রতিদিন | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিত্যদিন তাঁরাই বাঁশি বাজিয়ে আবাসন, বাড়ি থেকে নোংরা, আবর্জনা সংগ্রহ করেন। বাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, বাসনকোসন মাজার কাজ করেন বহু পরিচারিকা। সমাজের এইসব পেশার মানুষদের ছাড়া একটা দিনও চলে না। তবু তাঁরা কি আজও ব্রাত্য নন? আড়চোখে তাকানো, তফাতে সরে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার ঘটনাও প্রায়শই দেখা যায় নাগরিক সমাজে! পরিচারিকা থেকে সাফাইকর্মীরা কি পিছিয়ে থাকা শ্রেণি? তাঁদের সকলের সঙ্গে মেলামেশার, পুজোর দিনে আনন্দ উপভোগের কোনও জায়গা নেই? সেই বিষয়কেই ভাবিয়েছিল রাজপুর সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটিকে। এবার কোনও তারকা মুখ নয়, এলাকার সাফাইকর্মীরাই কাটলেন উদ্বোধনের ফিতে। উৎসবের সূচনা হল তাঁদেরই হাতে।

    নিম্নচাপের ভ্রুকুটি রয়েছে বাংলায়, আগাম সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। পুজোর দিনগুলিতে বৃষ্টিতে ভাসতে পারে একাধিক জেলা। সেই আশঙ্কাও থাকছে। বৃষ্টি কার্যত উপেক্ষা করেই মানুষজন মণ্ডপ, প্রতিমা দেখতে বেরিয়ে পড়েছে ছাতা হাতে। পঞ্চমীতেই রাস্তায় ঢল নেমেছে দর্শনার্থীদের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজপুর সার্বজনীন দুর্গোৎসবের মণ্ডপেও ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। এলাকায় বাংলা স্কুলের পুজো বলে খ্যাত এটি। এলাকার সাফাইকর্মীরা এবার ওই পুজোর উদ্বোধন করেছেন।

    “ভুলিও না— তোমার সমাজ সে বিরাট মহামায়ার ছায়ামাত্র; ভুলিও না—নীচজাতি, মুখ, দরিদ্র, অজ্ঞ, মুচি, মেথর তোমার রক্ত, তোমার ভাই! হে বীর, সাহস অবলম্বন কর; সদৰ্পে বল—আমি ভারতবাসী, ভারতবাসী আমার ভাই। বল—মূর্খ ভারতবাসী, দরিদ্র ভারতবাসী, ব্রাহ্মণ ভারতবাসী, চণ্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই।” স্বামী বিবেকানন্দের এই বার্তাকে মানুষ ভুলে যায়নি। সেই বাণীকে অবলম্বন করেই এবার এই পদক্ষেপ বলে উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে।

    প্রতিবারের মতো এবারও প্রতিমা সাবেকি। মোহনবাঁশি রুদ্র পালের স্টুডিওর তৈরি প্রতিমা শোভা পাচ্ছে মণ্ডপে। প্রতিমায় কোনও থিমের ছোঁয়া থাকে না। এবারের মণ্ডপের ক্ষেত্রেও ইতিহাসের ছোয়া রয়েছে। রাজপুর তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনার চারশো বছরের ইতিহাস ফুটে উঠেছে মণ্ডপে। পুরনো আদলে জমিদার বাড়ির বিশাল ঠাকুর দালানের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। সেখানেই শোভা পাচ্ছে দেবী দুর্গার মৃন্ময়ী মূর্তি।
  • Link to this news (প্রতিদিন)