পাক গুপ্তচরের সঙ্গে যোগ ছিল সোনাম ওয়াংচুকের, অভিযোগ লাদাখ পুলিশের
বর্তমান | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
লে: জাতীয় নিরাপত্তা আইনে (এনএসএ) গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। লাদাখ থেকে রাজস্থানে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়েছে যোধপুরের জেলে। এই অবস্থায় শনিবার লাদাখ পুলিশের ডিজি এস ডি সিং জামওয়ালের দাবি, ধৃত সোনাম ওয়াংচুকের সঙ্গে পাকিস্তানি যোগ মিলেছে। গতমাসে এক পাকিস্তানি গুপ্তচরকে (পিআইও) গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই পাক গুপ্তচরের সঙ্গে ওয়াংচুকের যোগাযোগ ছিল। ওয়াংচুকের আন্দোলনের ভিডিও সীমান্তের ওপারে পাঠাচ্ছিল ওই পাক চর। লাদাখ পুলিশ ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সোনামের বিরুদ্ধে পাক যোগ ও বিদেশ অনুদান সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনলেও তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। সরব কংগ্রেসও। এমনকী লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে মোদি সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ জামিয়াং সেরিং নামগিয়ালও। নিরস্ত্র প্রতিবাদীদের উপর পুলিশের গুলি চালনার তদন্তও দাবি করেছেন তিনি।
লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা ও সংবিধানের ষষ্ঠ তপশিলের দাবিতে পরিবেশকর্মী তথা শিক্ষাবিদ ওয়াংচুক অনশনে বসেছিলেন। এরইমধ্যে গত বুধবার যুব সংগঠনের বিক্ষোভ ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। মৃত্যু হয় চারজনের। জখম পুলিশকর্মী সহ ৯০ জন। প্ররোচনামূলক মন্তব্য ও হিংসায় উস্কানির অভিযোগেই শুক্রবার ওয়াংচুককে গ্রেফতার করা হয়। আর এদিন সোনামের সঙ্গে পাক যোগের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠায় তাঁর বিভিন্ন বিদেশ সফরের কথা উল্লেখ করল পুলিশ। সাংবাদিক বৈঠকে লাদাখের ডিজিপি বলেন, ওয়াংচুক ‘দ্য ডন’ সংবাদমাধ্যমের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সফরও করেছিলেন। এইসব সফর সন্দেহজনক। এব্যাপারে তদন্ত চলছে। সমস্ত তথ্য মুহূর্তে প্রকাশ করা যাবে না। ওয়াংচুকের প্রোফাইল ও ইতিহাসের যাবতীয় তথ্য ইউটিউবে রয়েছে। তিনি আরব বসন্তের কথা বলেছেন। শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের সাম্প্রতিক অচলাবস্থার উল্লেখ করেছেন। তাঁর ভাষণ হিংসায় প্ররোচনা দিয়েছে। ওয়াংচুককে রাজস্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা জানিয়েছে প্রশাসন।
সোনামের গ্রেফতারির নিন্দা করে কংগ্রেস বলেছে, এভাবে লাদাখে শান্তি ফিরবে ভেবে থাকলে সরকার ভুল করছে। এমনকী কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন লাদাখে বিজেপির মুখ বলে পরিচিত প্রাক্তন সাংসদ নামগিয়ালও। লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে লেখা চিঠিতে তাঁর বক্তব্য, ‘আরও ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেত। হিংসা ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা অবশ্যই নিন্দনীয়। তবে নিরস্ত্র প্রতিবাদীদের উপর গুলিচালনা সাধারণ মানুষের আস্থায় আঘাত হেনেছে।’ এরইমধ্যে শনিবার লে শহরে কয়েক দফায় কার্ফু শিথিল করা হয়। তবে এদিনও রাস্তায় ছিল নিরাপত্তা বাহিনীর টহল।