সিন্দুরে ধ্বংস হওয়া বিমান ঘাঁটি নিয়ে জয়ের দাবি পাকিস্তানের! রাষ্ট্রসংঘে ঠেস ভারতের
বর্তমান | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নয়াদিল্লি: রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় ভারতের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এবার তাঁর সেই সব দাবির কড়া জবাব দিল ভারত। ‘জঙ্গিদের আঁতুড়ঘর’ বলে পরিচিত পাকিস্তানের মুখে যে ‘সন্ত্রাসবাদ’ নিয়ে কথা বলাই সাজে না, সে কথাও রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে বুঝিয়ে দিয়েছে দিল্লি। শনিবার সাধারণ সভায় ‘জবাব দেওয়ার অধিকার’ প্রয়োগ করে ভারত। এদিন পাকিস্তানকে জবাব ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি দলের ফার্স্ট সেক্রেটারি পেটাল গেহলট। শাহবাজ দাবি করেছিলেন, ভারতের ‘হিন্দুত্ব সন্ত্রাসবাদ’ বিশ্বের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠছে। এদিন সেই অভিযোগের জবাব দিতে ওসামা বিন লাদেনের প্রসঙ্গ তোলেন গেহলট। তিনি জানান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ‘অদ্ভুত নাটক’ করছেন। উনি সন্ত্রাসবাদকে মহান করে দেখাতে চাইছেন। অথচ এই পাকিস্তানই পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর রাষ্ট্রসংঘে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠী ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট বা টিআরএফ-কে আড়াল করতে চেয়েছিল। গেহলট আরও জানান, পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার ইতিহাস অনেক পুরোনো। ওদের লজ্জা নেই। ওই দেশই বছরের পর বছর ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দিয়েছিল। সে কথা ভুলে যাবেন না। পাকিস্তান জঙ্গিঘাঁটিগুলি ধ্বংস করলে ও মোস্ট ওয়ান্টেডদের ভারতের হাতে তুলে দিলেই শান্তি আলোচনা শুরু হবে বলেও এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে ভারত।
শুধু সন্ত্রাসবাদ নয়, কাশ্মীর, অপারেশন সিন্দুর ও সিন্ধু জলচুক্তির মতো বিষয়গুলি নিয়েও নানা রকম দাবি করেছিলেন শরিফ। এদিন প্রত্যেকটি বিষয় ধরে ধরে জবাব দেন পেটাল গেহলট। পাক প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, অপারেশন সিন্দুরের পরে যে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়, তাতে তাঁরাই জয়ী হয়েছেন। ইসলামাবাদ শান্তির পক্ষে সওয়াল করে বলেও দাবি ছিল শরিফের। এদিন তা নিয়ে জবাব দিতে দিয়ে পাকিস্তানকে কার্যত বিদ্রুপ করেন ভারতের প্রতিনিধি। গেহলট বলেন, ‘পাকিস্তানের একাধিক বিমান ঘাঁটি ভারতের আক্রমণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। সেই সব ছবি সকলেই দেখতে পাবে। যদি ধ্বংসপ্রাপ্ত রানওয়ে আর পুড়ে যাওয়া হ্যাঙার পাকিস্তানের কাছে জয় বলে মনে হয়, তাহলে তারা সে সব নিয়েই আনন্দ করুক।’ তিনি আরও জানান, পাকিস্তানের মদতে ফের সাধারণ ভারতীয়দের উপর জঙ্গি হামলা হয়েছে। নয়াদিল্লি শুধু দেশের নাগরিকদের রক্ষার জন্য পদক্ষেপ করেছে। অপারেশন সিন্দুরে যে শুধু জঙ্গিঘাঁটিগুলিকেই টার্গেট করা হয়েছিল, মৃত জঙ্গিদের ছবিসহ প্রমাণও ভারতের কাছে রয়েছে বলে জানিয়ে দেন গেহলট।
শুধু পাকিস্তান নয়, এদিন রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চ থেকে আমেরিকাকেও ঘুরিয়ে বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রতিনিধি। গেহলট জানান, ভারত ও পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের সমস্যা দ্বিপাক্ষিকভাবে মিটিয়ে ফেলতে চেয়েছে। ফলে এতে তৃতীয় পক্ষের নাক গলানোর কোনও জায়গা নেই। এটাই ভারতের দীর্ঘদিনের সিদ্ধান্ত। যদিও শরিফ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই কৃতিত্ব দিয়েছিলেন।