সুজয় সরকার, হিলি: হিলি সীমান্তে কাঁটাতারের ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডে অখ্যাত গ্রাম পূর্ব গোবিন্দপুর। বছরভর অপেক্ষা করে থাকা এই গ্রামের মানুষের কাছে দুর্গাপুজো মানেই আনন্দ, ঐক্য এবং সম্প্রীতির উৎসব। শুধু এপার নয়, বাংলাদেশের মানুষও অংশ নেন পূর্ব গোবিন্দপুরের এই পুজোয়। অস্থির পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশের মানুষ এবার এই পুজোয় শামিল হতে পারছেন না। তবে দেবীর পুজোর জন্য ফুল-ফল পাঠিয়েছেন সেদেশের হিন্দুরা।
দেশভাগের পর সীমান্তের জিরো পয়েন্টে একটি অস্থায়ী মন্দিরে ১৯৫৩ সালে এই পুজো শুরু হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তাজনিত কারণে মন্দিরটি সরিয়ে আনা হয় ভারতীয় ভূখণ্ডের ভিতরে। তারপর থেকে গোবিন্দপুর গ্রামে এই পুজো হয়ে আসছে। এবছরও সেখানে দেবীর আরাধনা হচ্ছে। গ্রামের মানুষের চাঁদায় এবং সরকারি অনুদানে এবছরও পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। আড়ম্বর খুব বেশি নাহলেও আন্তরিকতায় কোনও খামতি রাখেন না কাঁটাতারের ওপারের মানুষরা। কয়েকটা দিন পুজো মণ্ডপ প্রাঙ্গণে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগে পুজো প্রাঙ্গণে প্রতিদিন নাটক, কীর্তন, গান সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। এখন সেসব না হলেও এবার স্থানীয়ভাবে নাটক মঞ্চস্থ হবে।
সীমান্ত সুরক্ষার কারণে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে হিলি থানা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ারও মোতায়েন থাকবে। পূর্ব গোবিন্দপুরের বাসিন্দা ছোটন মণ্ডল জানান, সরকারি আইন ও নিয়ম মেনে পুজোর আয়োজন করতে হয়। গ্রামের ৫০-৬০ টি পরিবার মিলে আমরা পুজো করি। সরকারি অনুদান ও চাঁদা দিয়ে এবছরও পুজো হচ্ছে।
পূর্ব গোবিন্দপুর গ্রামে সারাবছরে কেবল মাত্র একটিই পুজো করা হয়। তাই দীর্ঘ অপেক্ষার পরে পুজোতে সবাই অংশগ্রহণ করেন। এমনটাই জানালেন পুজো কমিটির সম্পাদক অতুল মণ্ডল।