নতুন জামাকাপড় বা জুতো নয়, জেন-জি’র প্রথম পছন্দ ব্যক্তিগত ইলেকট্রনিক গ্যাজেটস
বর্তমান | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, মালদহ: দুর্গাপুজো মানেই নতুন জামাকাপড়। দুর্গাপুজো মানে নতুন জুতো। সব মিলিয়ে নিজেকে নতুন বহিরঙ্গে সাজিয়ে নতুন আনন্দের মেজাজে এক মণ্ডপ থেকে আরেক মণ্ডপে হই হই করে ছুটে বেড়ানো। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বোধহয় দ্রুত বদল আসছে পুজোর সময়ে কেনা সামগ্রীর তালিকায়। বিশেষ করে আজকের তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশ নতুন জামাকাপড়, জুতো, প্রসাধনীর পরিবর্তে কিনতে চাইছে দামী মোবাইল অথবা ল্যাপটপের মতো ইলেকট্রনিক গ্যাজেটস।
পুজোর বাজারে তাই এই প্রজন্মের ক্রেতাদের বাজার ধরতে বেশকিছু চমকও দিচ্ছে ইলেকট্রনিক গুডসের দোকানগুলিও। কোথাও মোটা ছাড় আবার কোনও দোকানে পুজো উপহারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে নবীন ক্রেতাদের নজর কাড়তে। তবে দোকানে না গিয়ে নবীন প্রজন্মের একাংশ আবার ঘরে বসে অনলাইনেই কিনছেন পছন্দের ইলেকট্রনিক গ্যাজেটস। বেঙ্গালুরু থেকে পুজোর ছুটিতে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ইংলিশবাজারের বাড়িতে এসেছেন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া নির্বাণ মৈত্র। মা বাবাকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন পুজোয় একটি টি-শার্ট ও জিনসের প্যান্ট ছাড়া অন্য কিছুই নেবেন না তিনি। বরং দামী স্মার্টফোন চাই তাঁর যার দাম নিদেনপক্ষে ৫০ হাজার টাকা। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মালদহ শহরের একটি দোকানে স্মার্টফোন কিনতে এসে বেসরকারি ব্যাঙ্কের আধিকারিক শুভব্রত মৈত্র বললেন, দামি মোবাইল কিনলে ছাড়ের পাশাপাশি দু’টি, তিনটি বা পাঁচটি কিস্তিতে দাম পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। তাই ছেলের আব্দার মেনে নিয়েছি। হায়াদরাবাদে আইনের স্নাতক স্তরের পড়ুয়া দেবদ্যুতি সিংহ তাঁর মামাকে নিয়ে হাজির ল্যাপটপের দোকানে। মেধাবী ছাত্রী দেবদ্যুতি বলেন, এখন লেখাপড়া অনেক বদলে গিয়েছে। স্নাতক স্তরেও আমাদের ইন্টারনেট ঘেঁটে প্রচুর তথ্য ও পরিসংখ্যান জোগাড় করতে হয়। প্রজেক্টও তৈরি করতে হয়। স্মার্টফোনে সবকিছু করা যায় না। তাই মামার কাছে ল্যাপটপ চেয়েছি। পুজোতে সামান্য জামাকাপড় হলেই চলবে। পুজো ছাড়াও জন্মদিন বা অন্যান্য সময়ে প্রচুর নতুন পোশাক উপহার পাই। তাই এখন নিজের লেখাপড়ার জন্য আমার ল্যাপটপই চাই। মামা কিনে দেবেন বলেছেন। সঙ্গে একটা স্মার্ট রিস্টওয়াচও ফ্রি পাচ্ছি।
মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, তরুণ প্রজন্মের দামী স্মার্টফোন, ল্যাপটপ কেনার ঝোঁক উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। আগে আমরা পুজোতে জামাকাপড়, জুতো ইত্যাদি কেনার পাশাপাশি বড় জোর একটা বড় রেফ্রিজারেটর বা ওয়াশিং মেশিন কিনতাম যা পরিবারের সব সদস্যদেরই কাজে লাগত। কিন্তু এখনকার জেন-জি ব্যক্তিগত ইলেকট্রনিক গ্যাজেটস কিনতে বেশি আগ্রহী। এই পরিবর্তন আমরা স্পষ্ট লক্ষ্য করছি।