বর্ধমানের মির্জাপুরে জয়দুর্গা মাতার বিশেষ পুজোর আয়োজন দুর্গাপুজোয়
বর্তমান | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে বর্ধমানের মির্জাপুরে হয়ে আসছে জয়দুর্গা মাতার পুজো। মায়ের মাহাত্ম্যর নানা কাহিনী ছড়িয়ে আছে মুখে মুখে। মনের বাসনা জানিয়ে মায়ের কাছে অনেকেই প্রার্থনা করেন। মা কাউকে খালি হাতে ফেরান না, এমনই বিশ্বাস স্থানীয়দের। এখানে শিলামূর্তি সারা বছরই পূজিত হয়। দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে মায়ের বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। গ্রামের মাঝে উঁচু ঢিবিতে রয়েছে মায়ের মন্দির। নবমীর দিন মাকে এই মন্দিরে আনা হয়। বাকি দিনগুলিতে মা গ্রামেই অন্য মন্দিরে অধিষ্ঠান করেন। বহু বছর পূর্বে গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের এক সদস্যকে মা স্বপ্নাদেশ দেন। ঘোষ ও দাসপাড়ার মাঝে পেঁড়োর ডোবা নামে একটি জলাশয়ে দেবীমাতা রয়েছেন। জলাশয় থেকে মায়ের বেলে পাথরের মূর্তি উদ্ধার করা হয়। হোম করে মাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। শুরু হয় নিত্যপুজো।
গ্রামের বাসিন্দা অশোক গুপ্ত, তারা মুখোপাধ্যায় বলেন, আমাদের মা খুব জাগ্রত। আশেপাশে গ্রামের বাসিন্দারাও পুজো দিতে মন্দিরে আসেন। এই পুজো যাতে কোনও দিন বন্ধ না হয়, তারজন্য বর্ধমানের মহারাজা মায়ের নামে ভিটে, কৃষিজমি দিয়েছিলেন। পুজো কমিটির সদস্য লক্ষ্মীনারায়ণ শ্যাম, কার্তিক পাঁজা, কিরিটিভূষণ সাঁই বলেন, মায়ের আলাদা ভোগঘর রয়েছে। এছাড়া জোগাড়ের ও পুরোহিতদের থাকার আলাদা ঘর রয়েছে। আগে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার পুজো পরিচালনা করতেন। এখন কমিটি সব কিছু দেখে।
বর্ধমানের সরাইটিকর পঞ্চায়েতের মির্জাপুর গ্রামের জয় দুর্গামাতার পুজোর আয়োজন কয়েক দিন আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে। জোড়া বেল দিয়ে পঞ্চমীর সন্ধ্যায় মায়ের সংকল্প করা হয়। অষ্টমীতে লুচি ভোগের আয়োজন করা হয়। সন্ধিপুজোর সময় ছাঁচি কুমড়ো বলি হয়। এই পুজো দেখতে মন্দির চত্বরে ভিড় উপচে পড়ে। স্থানীয়রা বলেন, গ্রামের বাসিন্দারা কোনও ভালো কাজ শুরু করার আগে মায়ের দ্বারস্থ হন। আবার কেউ সমস্যায় পড়লেও মন্দিরে আসেন। মা সবাইকে রক্ষা করেন, এমনই বিশ্বাস মির্জাপুরের মানুষের।