নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: খানাকুলের ঘোষপুর সর্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গোৎসব কমিটির পুজো মণ্ডপের থিমে উঠে এল ডিভিসির জলে স্থানীয় মানুষের আর্তনাদের কাহিনি। ঘোষপুর সমাজ শিক্ষা কেন্দ্র ও গ্রামবাসীদের উদ্যোগে এই পুজোর আয়োজন হয়েছে। এবার এই পুজো ৫৮ তম বর্ষে পদার্পণ করল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে পুজোর উদ্বোধন করেন। ইতিমধ্যেই পুজো মণ্ডপ ঘুরে দেখেছেন আরামবাগের সাংসদ মিতালি বাগ। হুগলির জেলাশাসক মুক্তা আর্য বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিও করে গিয়েছেন। ঘোষপুর ইউনিয়ন নেতাজি হাইস্কুল প্রাঙ্গণে পুজোর মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। হুগলি জেলা প্রশাসনের তরফে আয়োজিত বিশ্ববাংলা শারদ সম্মানে ঘোষপুর সমাজ শিক্ষাকেন্দ্রের এই পুজো সেরা সমাজ সচেতনতা বিভাগে বিজয়ী স্থান দখল করেছে। পুজো দেখতে প্যান্ডেলে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। ফি বছর বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকায়। ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। তারফলে সেখানকার বাসিন্দাদের জনজীবন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। টানা কিছুদিন ধরে জলবন্দি অবস্থায় কাটাতে হয় বাসিন্দাদের। সেই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পুজো মণ্ডপ তৈরি করেছেন উদ্যোক্তারা।
পুজো কমিটির সম্পাদক শেখ হায়দার আলি বলেন, ডিভিসির ড্যামগুলি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার করা হয়নি। এমনকী, দামোদর থেকে মুণ্ডেশ্বরী নদীতে জল বণ্টনও পরিস্থিতি অনুযায়ী করা হয় না। তার ফলে খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই সময় মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরা পুজোর থিম বানিয়েছি। পুজো মণ্ডপের থিমের মাধ্যমে বন্যা পরিস্থিতির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার আর্জিও জানানো হয়েছে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, ব্যারাজের সদৃশ পুজো মণ্ডপের বহিঃসজ্জা করা হয়েছে। তা দিয়েই দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন মণ্ডপে। এছাড়া মণ্ডপের চারপাশে খড়ের ছাউনি দেওয়া ঘরে রাখা হয়েছে নানা মডেল। উদ্যোক্তাদের দাবি, বন্যা পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের পরিস্থিতি কেমন, সেই চিত্রের একাংশ মডেলের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। বাঁশ, বাটাম, কাপড়, রং প্রভৃতি সামগ্রী ব্যবহার হয়েছে মণ্ডপে। এবার পুজোয় বাজেট প্রায় আট লক্ষ টাকা। পুজো কমিটির সভাপতি প্রদ্যুৎ কোঙার, উপদেষ্টা অলোক রায়, অসিতকুমার রায় ও শৈলেন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে স্থানীয় শিশু শিল্পীদের নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া বাউল অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়েছে। দুঃস্থদের জামা কাপড় বিলির কর্মসূচিও রয়েছে।