• বড়ঞার পাঁচথুপী গ্রামে ১০ জমিদার বাড়ির পুজোকে ঘিরে উন্মাদনা তুঙ্গে
    বর্তমান | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ইন্দ্রজিৎ কর্মকার, কান্দি: গ্রামে একসঙ্গে ১০টি জমিদার বাড়িতে পুজো হয়। সেই পুজোগুলি দেখতে শুধু স্থানীয় নয়, প্রতিবেশী গ্রাম থেকেও দর্শনার্থীরা ভিড় জমান। বড়ঞা থানার পাঁচথুপী গ্রামে আজ ষষ্ঠীর সকাল থেকেই প্রাচীন এই পুজোগুলি ঘিরে উন্মাদনা দেখা যাবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা। বর্ধিষ্ণু এই গ্রামটির ইতিহাস কয়েকশো বছরের প্রাচীন। একসময় এখানে দু’টি জমিদার বাড়িতে পুজো শুরু হয়। পরে সেই সংখ্যা বেড়ে হয় ১০। গ্রামের জমিদার বাড়ির পুজোগুলি হল সিংহবাহিনী বাড়ি, পাটির বা মাটির বাড়ির পুজো, রাইজি বাড়ি, বড় তরফ, মধ্যম তরফ, খাজাঞ্চি বাড়ি, বেলতলা বাড়ি, মুখোপাধ্যায় বাড়ি, পালবাড়ি ও সিংহ বাড়ির পুজো।

    বাসিন্দারা জানান, এই জমিদার বাড়ির পুজোগুলি আজও প্রাচীন রীতি মেনে চলেছে। প্রত্যেক বাড়ির প্রতিমা ডাকের সাজে সাজান হয়। পুরনো রীতি ও ঐতিহ্য মেনে দেবীর পুজো হয়। এখনও পর্যন্ত তিনটি পুজোয় মহিষ বলি দেওয়ার রীতি চালু রয়েছে।

    একসঙ্গে এতগুলি জমিদার বাড়ির পুজো দেখতে দূর-দূরান্ত থেকেও দর্শনার্থীরা গ্রামে আসেন। পাঁচথুপী নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক তপনকুমার লাহা বলেন, পাঁচথুপীর দুর্গাপুজো গোটা বাংলায় বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। একটি ছোট গ্রামে ১০টি জমিদারী পুজো হওয়া নেহাত ছোট ব্যাপার হতে পারে না। এখানকার প্রতিটি পুজোয় নিজস্ব রীতি প্রচলিত রয়েছে। পালবাড়ি পুজোর সদস্য রাজকুমার পাল বলেন, পুজোর পাঁচদিন চরম ব্যস্ততার মধ্যে কাটে। বাইরে থেকে প্রচুর লোকজন আসেন। তাঁদের অপ্যায়ণে যাতে কোনও ত্রুটি না হয়, সেদিকটাও লক্ষ্য রাখতে হয়।

    গ্রামের পুজোগুলিতে দেবীর বিসর্জনেও বিশেষ নিয়ম চালু রয়েছে। দশমীর সন্ধ্যায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে গ্রামের পাঁচটি প্রতিমা একসঙ্গে বিসর্জনের জন্য বের হয়। ওই পাঁচ প্রতিমা হল দত্তবাড়ি, পালবাড়ি, সিংহবাহিনী, মাটির বাড়ি ও রাইজি বাড়ি। তার আগে বিকেলের দিকে আরও পাঁচটি বাড়ির প্রতিমা একসঙ্গে বিসর্জনের জন্য বের হয়। সেগুলি হল খাজাঞ্চি বাড়ি, মুখোপাধ্যায় বাড়ি, বড় তরফ,  মধ্যম তরফ ও বেলতলা পুজো। মাটির বাড়ি পুজোর সদস্য উৎপল ঘোষরায় বলেন, আজ ষষ্ঠী থেকেই গ্রামে প্রচুর মানুষ আসবে। আমরাও প্রস্তুত রয়েছি। দর্শনার্থীরা যাতে কোনও সমস্যায় না পড়েন, সেজন্য আমরা সতর্ক রয়েছি। রাইজি বাড়ির পার্থ ঘোষরায় বলেন, ষষ্ঠী থেকেই দর্শনার্থীরা ভিড় জমাতে থাকেন। দশমীর বিসর্জনেও প্রচুর মানুষ অংশ নেয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে বলে মনে হয় না। ইতিমধ্যে গ্রামজুড়ে মেলা বসতে শুরু করেছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)