জমা জল প্রায় সরে গিয়েছে। শারদ-আলোয় মেতেছে শহর। এর মধ্যেই শনিবার, পঞ্চমীর দিন সকালে বেহালার সরশুনায় জমা জলে এক মহিলার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনাকে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে সরব হল বিরোধীরা। এই প্রেক্ষিতে পাল্টা বিভিন্ন পক্ষের দায়িত্ব ও জন-সতর্কতায় জোর দিয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ‘রেকর্ড’-বৃষ্টিতে জল-যন্ত্রণা ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একের পর এক মৃত্যু দেখেছিল শহর। এর পরে বেশ কয়েকটা দিন কেটে গেলেও এ দিন সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় ফের মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “মমতা যত দিন মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন, তত দিন বাংলার মানুষকে এ ভাবেই প্রাণ দিতে হবে। এটাই বাংলার ভবিতব্য।” প্রশাসনিক ‘অব্যবস্থা’র অভিযোগ তুলে তাঁর সংযোজন, “মানুষ মারা যাচ্ছেন, অথচ সরকার, পুরসভার ভ্রুক্ষেপ নেই। মুখ্যমন্ত্রী ডান্ডিয়ায় ব্যস্ত!”
মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছে সিপিএম-ও। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, “সরকার ভাবছে, পরের বার ক্ষমতায় এলে এই রাজ্যের জল অন্য রাজ্যে পাঠিয়ে দেবে! যখন জমা জলে ১১ জন মারা গেলেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী ডান্ডিয়া নেচেছিলেন। প্রশাসনের শীর্ষে থাকা মুখ্যমন্ত্রী এখনও দায় এড়াবেন?” পাশাপাশি, জমা জলে এত মানুষের মৃত্যুর পরেও মুখ্যমন্ত্রী বার বার নানা পক্ষের উপরে দোষ চাপালেও, সরকারের দায় স্বীকার করেননি। এই প্রেক্ষিতে মমতার উচিত সংশ্লিষ্ট পক্ষের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা অথবা দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া, এই কথা ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার।
বিরোধীদের অভিযোগে অবশ্য আমল দেয়নি তৃণমূল। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার পাল্টা বলেছেন, “বিদ্যুৎ সংযোগ, রক্ষণাবেক্ষণে পুরসভা ও বণ্টন সংস্থার দায়িত্ব নির্দিষ্ট আছে। আগামী কয়েক দিন লক্ষ লক্ষ মানুষ পথে থাকবেন। বৃষ্টির সম্ভাবনাও থাকছে। দায় কার, তা নিয়ে তর্ক ছেড়ে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।”