রাজ্য সরকারের দফতরে আগেই ছুটি পড়েছে। শুক্রবার বিভিন্নবেসরকারি সংস্থার অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের দফতরেও ছুটি পড়ে গিয়েছে। ফলে, অফিসযাত্রীদের ভিড়ের পরিবর্তে আপাতত শুধুমাত্র দর্শনার্থীদের ভিড় সামলানোই দায়িত্ব মেট্রোকর্তৃপক্ষের। কিন্তু, তার মধ্যেও শনিবার, পঞ্চমীর দিন যে ভাবে মেট্রোয় যাত্রীদের ভিড় আছড়ে পড়েছে, তাতে আজ, রবিবার এবং পুজোর আগামী কয়েক দিনের ভিড় নিয়ে আশঙ্কা যাচ্ছে না।
আবহাওয়া অনুকূল থাকলে আজ, রবিবার ভিড়ের পারদ আরও চড়তে পারে। ইতিমধ্যেই উত্তরে দমদম, গিরিশ পার্ক, শোভাবাজার স্টেশনের পাশাপাশি দক্ষিণে ভিড় উপচে পড়ছে কালীঘাট স্টেশনে। পুজো দেখতে আসা দর্শনার্থীদের চাপে বিভিন্ন স্টেশনে বুকিং কাউন্টারে টিকিট পেতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
এই ভিড় সামলাতে মেট্রো কর্তৃপক্ষ একাধিক ব্যবস্থা নিলেও উত্তর-দক্ষিণ পথে মেট্রো পেতে যাত্রীদের ব্যস্ত সময়ে গড়ে সাত থেকে আট মিনিট অপেক্ষা করতে হচ্ছে। মেট্রোর এই ব্যবধান বাড়লেই পরিষেবা যে কোনও মুহূর্তে বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শনিবার দিনভর মেট্রোয় কার্যত ঠাসাঠাসি ভিড় চোখে পড়েছে। যাত্রী-সংখ্যা প্রায় সাত লক্ষ ছুঁইছুঁই বলে খবর। শুক্রবার উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় প্রায় ৬ লক্ষ ৮০ হাজার যাত্রী সফর করেছেন। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সঙ্গে মিলে দু’টি রুটে ৯ লক্ষ ৩২ হাজারের বেশি যাত্রী সফর করেছেন।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় যাত্রী-সংখ্যা ২ লক্ষ ৩৫ হাজারের আশপাশে থাকছে। বিভিন্ন স্টেশনে বুকিং কাউন্টারের চাপ সামলাতে মেট্রোর তরফে যাত্রীদের স্মার্ট কার্ডব্যবহারের উপরে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
পুজোর সময়ে অনিয়মিত যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে তিন দিন এবং পাঁচ দিন মেয়াদের যথাক্রমে সাড়ে তিনশো এবং সাড়ে পাঁচশো টাকার টুরিস্ট কার্ড মিলছে। বিভিন্ন পথে মেট্রোয় সফর করে পুজো দেখতে বেরোনো যাত্রীদের স্বল্প মেয়াদের এই কার্ড ব্যবহারের জন্য মেট্রোর তরফে ব্যাপক প্রচার চালানো হচ্ছে।
বিভিন্ন স্টেশনে ভিড় নিয়ন্ত্রণে মেট্রো স্বল্প মেয়াদে নিরাপত্তাকর্মীদের নিয়োগ করেছে। কিছু ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকদেরও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। বুকিং কাউন্টারের সমস্যা সামলাতে নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রো থেকে ৭৮ জন কর্মীকে উত্তর-দক্ষিণ এবং ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় পুজোর সময়ের অতিরিক্ত কাজের দায়িত্ব সামলানোর জন্য বদলি করাহয়েছে।
মেট্রোর পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হলেও পরিষেবা নির্ঝঞ্ঝাট রাখার তৎপরতা যে কার্যত সরু সুতোয় ঝুলছে, তা মানছেন মেট্রোর কর্তারাও। উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় ট্রেনের ব্যবধান নিয়ন্ত্রণে রাখার উপরেই আপাতত তাঁরা জোর দিচ্ছেন।