• রাস্তার হাল ফেরাতে বরাদ্দ ১২৫০ কোটি
    আনন্দবাজার | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • রাস্তার হাল চিন্তায় রাখছে রাজ্য সরকারকে। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে মানুষের মন বুঝতে যে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ (আপাস) কর্মসূচি শুরু হয়েছে, তাতে বেশির ভাগ দাবি-অভিযোগই রাস্তার অবস্থাকে কেন্দ্র করে। ফলে রাজ্যের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতিতে পূর্ত দফতরকে অর্থ-সঙ্কটে ভুগতে হলেও, আপাস খাতে জরুরি ভিত্তিতে অর্থ মঞ্জুর করতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। তাতে এ পর্যন্ত প্রায় ১২৫০ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছে অর্থ দফতর। ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বিশেষ নির্বাচিত ক্ষেত্রে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলেরও (এসডিআরএফ)।

    জেলা প্রসাসনগুলি সূত্রে যা জানা গিয়েছে, তাতে আপাসের শিবিরগুলিতে যত অভাব-অভিযোগ-দাবি আসছে, তার বেশির ভাগই রাস্তার অবস্থাকে কেন্দ্র করে। শুধু যে সেটা গ্রামীণ এলাকাতেই, এমন নয়, বরং পুর এলাকাতেও এমন দাবি পাচ্ছে প্রশাসন। ফলে বিষয়টিকে অতি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করছে রাজ্য। কারণ, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তার বেহাল দশা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। তীব্র সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। এ নিয়ে ক্ষোভও বাড়ছে সাধারণের মধ্যে। এই অবস্থায় অনুমোদন থাকা ১২৫০ কোটি টাকার মধ্যে প্রায় সাড়ে সাতশো কোটি টাকা ২৩টি জেলার মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে আপাতত। অন্য দিকে প্রশাসনের অন্দরের দাবি, কেন্দ্র-রাজ্য মিলিয়ে পূর্ত দফতরের বাজেট ৫৪২৭ কোটি টাকা হলেও, অর্থ দফতর ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুমোদন দিয়েছিল ১৭৯৯ কোটি টাকার। তাতে প্রকৃত খরচের পরিমাণ ওই সময় পর্যন্ত ছিল প্রায় ৭৭৭ কোটি টাকা। যার বেশির ভাগ ব্যবহার হয়েছে আগের বছরগুলির খরচ মেটাতে।

    এক কর্তার কথায়, “পূর্ত দফতরের হাতে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় কোনও মতে গর্ত বোজানোর কাজটুকুই করা যাচ্ছে। রাস্তার পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের কাজ করার জন্য যে অর্থের দরকার, তা এখনও অবাধ নয়। অন্য দিকে, আপাসে সাধারণ নাগরিকদের যে দাবি উঠে আসছে, তাতে সেই কাজগুলি করা একান্ত জরুরি, বিশেষ করে ভোটের আগে। না হলে ভিন্ন বার্তা প্রতিষ্ঠিত হবে। তাই একাধিক সূত্র থেকে অর্থ জোগাড় করে এই কাজে বরাদ্দ করতে হচ্ছে।”

    প্রশাসনিক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, এসডিআরএফ-এ (৭৫% কেন্দ্রীয় অর্থ এবং বাকি ২৫% রাজ্যের) মোট তহবিলের ১০% নিজস্ব নির্বাচিত ক্ষেত্রে খরচ করতে পারে রাজ্য। তেমন ১৪টি ক্ষেত্র পৃথক ভাবে বেশ কিছু দিন আগে তালিকাভুক্ত হয়েছে। সেই হিসাবে প্রায় ৭০৩.৫০ কোটি টাকা ১৩টি দফতরের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছে রাজ্য। তাতে পঞ্চায়েত দফতর ১২৪ কোটি টাকা খরচ করবে গ্রামীণ রাস্তার মেরামত বা পুনর্গঠন খাতের জন্য। এ ভাবে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর, কলকাতা পুরসভাও কয়েক কোটি টাকা করে খরচ করে ‘রেমাল’ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কাঠামোগুলি সংস্কার করবে।

    প্রসঙ্গত, রাজ্যের প্রায় ৮০ হাজার বুথে এই আপাস কর্মসূচি চলার কথা। সরকারের অন্দরের দাবি, ইতিমধ্যেই দু’কোটির বেশি মানুষ চালু শিবিরগুলিতে যোগাযোগ করেছেন। সব মিলিয়ে আট হাজার কোটি টাকা খরচ করার ঘোষণা করে রেখেছে নবান্ন। তার মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ১২৫০ কোটি টাকার অনুমোদন হয়েছে নির্বাচিত কাজের দাবির ভিত্তিতে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)