আশার আলো বাড়ছে। এক দিকে, শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা পরিযায়ী শ্রমিক সোনালি বিবি-সহ বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করা ছ’জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফিরিয়ে আনতে হবে। অন্য দিকে, রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলামের প্রতিনিধি পৌঁছে গিয়েছেন সোনালিদের সাহায্যে। বাংলাদেশের এক পুলিশকর্তা শুক্রবারই জানান, সদ্য সে দেশের আদালত নির্দেশ দিয়েছে, জরিমানা করে সোনালিদের ফেরত পাঠানো যাবে। সূত্রের খবর, জরিমানা সংক্রান্ত ওই নির্দেশ নিয়ে আজ, রবিবার শুনানি রয়েছে চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর আদালতে।
অনুপ্রবেশকারী হিসেবে সোনালি, সুইটি বিবি-সহ ছ’জন এখন বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জের সংশোধনাগারে রয়েছেন। সে দেশের তরফেও সোনালিদের ভারতে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে খবর। সে ব্যাপারে সোনালিদের পাশে দাঁড়াতে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলামের প্রতিনিধি হয়ে বাংলাদেশে গিয়েছেন বীরভূমের পাইকরের যুবক মফিজুল শেখ। বৈধ ভিসায় তিনি সে দেশে পৌঁছেছেন শনিবার দুপুরে। সেখান থেকে এ দিন ফোনে বললেন, ‘‘জরিমানার অঙ্ক কত, কী নির্দেশ দেয় আদালত, তা রবিবার জানতে পারব। সেই অনুযায়ী, উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে পারব আমরা।”
দিল্লিতে কর্মরত পাইকর থানা এলাকার বাসিন্দা সোনালি ও সুইটি বিবি-সহ ছ’জনকে গত জুনে অসম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করা হয় বলে অভিযোগ। ২০ অগস্ট চাঁপাই নবাবগঞ্জের সদর মডেল থানার পুলিশ তাঁদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ধরে। বাংলাদেশের পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, আদালত-নির্দিষ্ট জরিমানার অঙ্ক কোষাগারে জমা হওয়ার পরে, জামিনের আবেদন করা যাবে। সোনালিরা জামিন পেলে তাঁদের ভারতে ফেরানোর পদক্ষেপ করবে ওই দেশের প্রশাসন।
বাংলাদেশে পৌঁছোনোর পরে সোনালিদের সাহায্য করেছিলেন সেখানকার নাগরিক বাসিন্দা ফারুক আলি। তিনি ফোনে এ দিন বলেছেন, “পুশ ব্যাকের খবর সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে দেখার পরে আমি ওঁদের (সোনালি বিবিদের) খোঁজ শুরু করেছিলাম। চার দিন পরে খুঁজে পাই সকলকে। এখানে ওঁরা একটা ঘর ভাড়া করে থাকছিলেন। কিন্তু পুলিশ জানতে পেরেই গ্রেফতার করে।” ফারুকের আরও সংযোজন, “ভালই হল। সোনালিরা জামিন পেলে, ওঁদের ভারতে ফেরার বিষয়ে আইনগত জটিলতা থাকবে না।”
বাংলাদেশের এক পুলিশকর্তা জানান, সে দেশের সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পেলে, স্বল্প সময়ের মধ্যে বিনিময় (সোনালিদের ফের ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা) করা হবে। যত দ্রুত সম্ভব সোনালি ও সুইটিরা ফিরুন, চাইছেন পরিজনেরাও। সামিরুল বলছেন, “যত ক্ষণ না সকলে দেশে ফিরছেন, আমরা সব রকম ভাবে ওই দু’টি পরিবারের পাশে আছি।”