• মহাকাশ বিজ্ঞানীদের হাতে দুর্গার মর্ত্যে আগমন
    আনন্দবাজার | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • বহু বছর ধরেই হচ্ছে সরস্বতী পুজো। ইসরোর আমদাবাদের স্পেস অ্যাপলিকেশন সেন্টার এবং ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির বাঙালি বিজ্ঞানীরা এ বার দুর্গা পুজোও করছেন। প্রথম বারের পুজোকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে বঙ্গীয় অন্তরীক্ষ সাংস্কৃতিক সমিতি।

    সমিতির প্রেসিডেন্ট প্রান্তিক চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের স্পেস অ্যাপলিকেশন সেন্টারের বিজ্ঞানীরা এখন অনেকেই একাধিক পে লোডে কাজ করছেন। যেগুলো এই বছরের শেষে বা আগামী বছরের গোড়ায় উৎক্ষেপণ হবে। সুতরাং তুমুল কর্মব্যস্ততা রয়েছে আমাদের। তাই সোম থেকে শনি কাজের পরে গভীর রাতে আর রবিবার সময় পেয়েছি পুজোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার।” তাঁর কথায়, “মহাকাশ হল স্পেস অ্যাপলিকেশন সেন্টারের কর্মক্ষেত্র। আবার মহাকাশ মানে কল্পিত স্বর্গলোক থেকে দেবী দুর্গা মর্ত্যে আগমন করছেন। বিজ্ঞানীদের মহাকাশের কাজ, আর বাঙালির দুর্গাপুজোর ঐতিহ্যের মেলবন্ধনই পুজোর থিম।’’

    পুজো কমিটির দায়িত্বে থাকা শ্রীজিতা দে এবং তনুশ্রী বসাক জানান, পুজো হবে বিক্রমনগর হাউসিং সোসাইটির কমিউনিটি হলে।শোলার সাজের মূর্তি তৈরি করছেন মণিনগরের কারিগররা। পুরোহিত আর ঢাকি কলকাতা থেকে এসেছেন। প্রসাদ, ভোগ রান্না, পুজোর বাজার, থালাবাসন কেনার কাজটা মহিলারা মিলে করেছেন। শ্রীজিতা বলেন, “প্রতি বার পুজোর সময় কলকাতাকে মিস করি। এ বার সেটা হবে না।’’ কমিটির যুগ্ম সচিব রণজিৎ দে জানান, কলকাতার পুজোর মতোই প্রতি সন্ধ্যায় হবে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। থাকছে ধুনুচি নাচ, ঢাক ও শাঁখ বাজানোর প্রতিযোগিতাও। সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দ্রাণী চৌধুরী ও সেক্রেটারি মৌমিতা দত্তের কথায়, ‘‘আমাদের ছেলেমেয়েরা, যারা আজন্ম বাংলার বাইরে থেকেছে, তাদের বাঙালি সংস্কৃতি শেখার এর চেয়ে বড় উপলক্ষ আর কী হতে পারে?” আর সমিতির কোষাধ্যক্ষ কৌশিক বসাকের কথায়, “আমাদের বাজেট কম। মূলত চাঁদা আর কিছু স্পনসরশিপ। তবে আয়োজনে খামতি নেই। পুজোর খরচ বাঁচাতে বেশিরভাগ কাজ নিজেরাই করেছি। যেমন আমাদের নানা প্রজেক্টে হয়ে থাকে।’’

    আমদাবাদ কালীবাড়ির বেঙ্গল কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের পুজো অবশ্য ৮৮ বছরে পা দিল। ওই পুজো সংগঠনের কোষাধক্ষ উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমদাবাদের কালীবাড়ির এই পুজো আমদাবাদের সব থেকে পুরনো এবং বড় পুজো। আমদাবাদের অধিকাংশ বাঙালি এই পুজো দেখতে আসেন। বেশিরভাগ বাঙালি বাড়িতে পুজোর চার দিন রান্না হয় না। পুজোর চার দিন প্রতি দিন ৫ হাজার মানুষ এখানে দুপুরের ভোগ প্রসাদ খান।’’ পুজো কমিটির সদস্যরা জানাচ্ছেন, তাঁদের পুজোকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের খাওয়ার স্টল বসে। প্রতি সন্ধ্যায় হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ বার পুরুলিয়া থেকে ছৌ নাচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নবমীতে হবে ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতা।

    এ ছাড়াও আমদাবাদে ১৫-১৬টি দুর্গা পুজো হয় বলে জানান উজ্জ্বল। বলেন, ‘‘ উল্লেখযোগ্য হল ওএনজিসির চাঁদখেদা বেঙ্গল কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের পুজো, কর্ণাবতী বঙ্গীয় পরিষদের পুজো, আদানি শান্তিগ্রামের পুজো। ঘরোয়া পুজোর মধ্যে চ্যাটার্জি বাড়ির পুজো দেখতেও প্রচুর লোক ভিড় করেন।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)