ভারতের পুজো কেমন হচ্ছে? দেখতে এসে গ্রেপ্তার দুই বাংলাদেশি
আজকাল | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুর্গাপুজোয় ভারতে ঘুরতে এসে গ্রেপ্তার হল দুই বাংলাদেশি নাগরিক। সেইসঙ্গে অনুপ্রবেশের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ। ঘটনার কেন্দ্র কোচবিহারের হলদিবাড়ি ব্লকের ঝাড়সিংহাসন গ্রাম। যা কার্যত ভারতের শেষ সীমানা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোররাতে এক মোটরবাইক আরোহী দুই অপরিচিত ব্যক্তিকে নিয়ে তিস্তার পার ধরে দেওয়ানগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। সন্দেহ হওয়ায় গ্রামবাসীরা তাঁদের থামতে বলেন। কিন্তু বাইকচালক দ্রুতগতিতে পালানোর চেষ্টা করে। ধাওয়া শুরু হলে হঠাৎই দুই যাত্রীকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় চালক।
পরে গ্রামবাসীরা দুই বিদেশিকে আটক করে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে হলদিবাড়ি থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে,ধৃতদের নাম দশরথ রায় (২৭) ও কালীদাস রায় (৫০)। তাঁরা বাংলাদেশের নীলফামারি জেলার ডোমার গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে, দুর্গাপুজোর আনন্দ উপভোগ করতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল। রবিবার তাঁদের মেখলিগঞ্জ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
অন্যদিকে এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই লাগাতার অনুপ্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তাঁদের অভিযোগ, ঝাড়সিংহাসন গ্রাম দিয়ে নিয়মিত বিদেশিরা এই দেশে ঢুকে পড়ছে। এক বাসিন্দার কথায়, 'তিস্তার ধারে এই উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে মাঝেমধ্যেই অনুপ্রবেশ হয়। আমরা নিজেদের সুরক্ষা নিয়েই দুশ্চিন্তায় থাকি। প্রশাসনকে আরও কড়া নজরদারি চালাতে হবে।'
স্থানীয়দের ক্ষোভের মধ্যেই রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও সামনে এসেছে। হিন্দু জাগরণ মঞ্চের উত্তরবঙ্গের কোর্ডিনেটর পাঞ্চালী দেব শিকদার নাগ বলেন, 'ভারত সরকার ইতিমধ্যেই সিএএ চালু করেছে। বাংলাদেশে যারা ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত, তাঁদের জন্য নাগরিকত্ব নেওয়ার পথ সহজ করা হয়েছে। কেউ যদি অত্যাচারিত হয়ে থাকেন, তবে তিনি বাংলাদেশি পরিচয় ত্যাগ করে আইনের মাধ্যমে ভারতের নাগরিক হতে পারেন। কিন্তু চুপিসারে সীমান্ত পেরিয়ে আসা আইনসম্মত নয়।'
এই ঘটনার পর গ্রামবাসীদের একাংশ দাবি তুলেছেন, ঝাড়সিংহাসন ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে আরও কড়া টহলদারি চালাতে হবে। প্রশাসনের তরফে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না এলেও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,ধৃতদের উদ্দেশ্য ও যোগাযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুর্গাপুজোর মতো উৎসবমুখর সময়ে এই অনুপ্রবেশ ঘটায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে।