রাস্তার ধারে দুই বছরের শিশু, ড্যামের জলে ভাসছে দম্পতির দেহ! বিয়ের কয়েক বছর পর ভয়াবহ ঘটনা
আজকাল | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভালবেসে বিয়ের পরেও নিত্যদিন অশান্তি। ঝামেলায় জেরবার দম্পতি। অবশেষে দুই বছরের শিশুকে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে চরম পদক্ষেপ করল তারা। একসঙ্গে ড্যামে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হল দম্পতি। দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের বেতুল জেলায়। শনিবার এক ড্যামে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয় এক দম্পতি। চরম পদক্ষেপ করার আগে রাস্তার ধারে দুই বছরের শিশুকে রেখে গিয়েছিল তারা। পুলিশ আধিকারিক দেবকরণ দেহেরিয়া জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছে বুকাখেদি ড্যামে। মৃতেরা হলেন শুভম কারদাতে (২৫) ও তাঁর স্ত্রী রোশনি (২৪)।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, চার বছর আগে ভালবেসেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন শুভম ও রোশনি। কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই দুজনের মধ্যে ঝামেলা বাড়তে থাকে। নিত্যদিনের অশান্তির জেরেই চরম পদক্ষেপ করেছে দম্পতি। শনিবার সকালে ঝগড়া, অশান্তির পর সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন রোশনি। তাঁর পিছু নেন শুভম। এরপর তাঁরা ওই ড্যামের কাছে পৌঁছে যান।
এরপর শুভম তাঁর মামাকে ফোন করেন। ফোন করে অনুরোধ করেন, তাঁর সন্তানকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য। এরপর ওই ড্যামে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয় দম্পতি। আর রাস্তার ধারেই পড়েছিল দুই বছরের শিশু। ফোন পেয়েই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছন শুভ্রের বাবা। সেখানে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে। কিন্তু ততক্ষণে শুভম ও রোশনির জীবন শেষ।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে আরও একটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল বেঙ্গালুরুতে। নিত্যদিন দাম্পত্য কলহ। সঙ্গে আর্থিক অনটন। দুইয়ের জেরে নিজেদের শেষ করতে চেয়েছিল দম্পতি। কিন্তু সন্তানদের একা ফেলে রেখে চলে যেতে চায়নি। তাই প্রথমে দুই সন্তানকে খুন করেন। কিন্তু স্ত্রী আত্মহত্যা করার আগেই, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন স্বামী। মর্মান্তিক এই ঘটনার পর শেষমেশ পুলিশি হেফাজতে ওই যুবতী।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে বেঙ্গালুরুতে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হোস্কোতে তালুকের গোনাকানাহাল্লি গ্রামেই এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। এই গ্রামের এক বাড়ি থেকে এক যুবক, তাঁর দুই সন্তানের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বর্তমানে ওই যুবকের স্ত্রী পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ৩২ বছরের শিবু ও মঞ্জুলা নিত্যদিন অশান্তি করতেন। দাম্পত্য কলহে দুজনেই জেরবার ছিলেন। কয়েক বছর এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েন শিবু। তখন থেকেই বেশিরভাগ সময় বাড়িতেই কাটাতেন। বাড়িতে থাকাকালীন স্ত্রীর প্রতি সন্দেহ ঘনায় তাঁর। স্ত্রীর আচরণ ঘিরে একাধিকবার সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। পাশাপাশি আর্থিক অনটনেও ভুগছিলেন।
দম্পতি গত কয়েক মাস ধরেই আত্মহত্যার চেষ্টা করছিল। কিন্তু সন্তানদের মুখের দিকে চেয়ে চরম পদক্ষেপ করতে পারেনি। অবশেষে স্বামী- স্ত্রী পরিকল্পনা করেন, আগে দুই সন্তানকে খুন করবেন। তারপর আত্মঘাতী হবেন তাঁরা। ঘটনার দিন প্রথমে মত্ত অবস্থায় দুই সন্তানকে খুন করেন তাঁরা। ১১ বছরের মেয়ে এবং সাত বছরের ছেলের শ্বাসরোধ করে খুন করেন তাঁরা। মৃত্যু নিশ্চিত করতে দুই সন্তানের মুখ জলের মধ্যে ডুবিয়ে রেখেছিলেন।
এরপর মঞ্জুলা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সেই সময়ে শিবু ঘনঘন বমি করছিলেন। তিনি জানান, তাঁর শরীর খারাপ লাগছে। বাইরে থেকে কিছু খাবার কিনে আনার জন্য স্ত্রীকে অনুরোধ করেন। শিবুকে বাড়িতে রেখে মঞ্জুলা বাইরে খাবার কিনতে যান। বাড়িতে ফিরে দেখেন, শিবু গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
নিজেকে শেষ করার আগে পরিবারের সদস্যদের গোটা ঘটনাটি জানাতে চেয়েছিলেন মঞ্জুলা। কিন্তু স্বামীর ফোনটি লক ছিল। তাই প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের ফোন করে তিনি বিষয়টি জানান। মঞ্জুলার মুখে বিবরণ শুনে আঁতকে ওঠেন প্রতিবেশীরা। তাঁরা তড়িঘড়ি করে ছুটে যান ঘটনাস্থলে। দ্রুত খবর দেওয়া হয় পুলিশে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে মঞ্জুলাকে আটক করে। বর্তমানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।