শশীর এখন সোনার সময়, তাকে নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে মোদি সরকার
আজকাল | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলির কার্যকালের মেয়াদ এক বছর থেকে বাড়িয়ে দুই বছর করার প্রস্তাব নিয়ে ভাবছে কেন্দ্র। সূত্রের খবর, বিরোধী দলের পক্ষ থেকে বারবার উত্থাপিত দাবিই এই পরিবর্তনের মূল কারণ। তাঁদের যুক্তি, কমিটির মেয়াদ বাড়ালে বিল ও নীতিগত বিষয়গুলির ওপর আরও গভীর ও বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনার সুযোগ তৈরি হবে। বর্তমানে কমিটিগুলির কার্যকাল চলতি মাসেই শেষ হতে চলেছে। তবে আপাতত কমিটি সভাপতিদের পদে কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
এই সম্ভাব্য পদক্ষেপটি রাজনৈতিকভাবে বড়সড় তাৎপর্য বহন করছে। বিশেষ করে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের জন্য। গত বছর ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁকে বিদেশ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল। যদি মেয়াদ দুই বছরে বাড়ানো হয়, তবে তিনি আরও দুই বছর একই পদে বহাল থাকবেন। তাঁর দল কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্তর্দ্বন্দ্ব ও মতভেদের প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত তাঁকে বড় সুবিধা দিতে পারে।
বর্তমানে মোট ২৪টি স্থায়ী কমিটি রয়েছে। প্রতিটি কমিটিতে ৩১ জন সদস্য থাকেন—লোকসভা থেকে ২১ জন এবং রাজ্যসভা থেকে ১০ জন। প্রতিটি কমিটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক বা দফতরের কাজকর্ম, বাজেট ও নীতিমালা পর্যালোচনা করে। এই কমিটিগুলি কার্যত সংসদীয় পর্যালোচনা ও নজরদারির গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।
কমিটি চেয়ারম্যানদের মনোনীত করেন লোকসভার স্পিকার ও রাজ্যসভার চেয়ারম্যান। আর সদস্যদের মনোনয়ন আসে রাজনৈতিক দলগুলির তরফ থেকে। বর্তমানে এই কমিটিগুলি প্রতিবছর পুনর্গঠিত হয়। ফলে প্রায়ই নতুন সদস্যদের প্রবেশ ঘটে এবং কাজের ধারাবাহিকতায় ব্যাঘাত ঘটে। বিরোধী দলের দাবি, এই বার্ষিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার কারণে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ বিল বা নীতিগত আলোচনার কাজ মাঝপথে থমকে যায়। তাই স্থায়ী কমিটির মেয়াদ দুই বছর করলে তদন্ত, পর্যালোচনা ও রিপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।
বিরোধী পক্ষের মতে, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিই আসল অর্থে আইন প্রণয়নের মানোন্নয়নের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যায়। সংসদে বিল উপস্থাপনের আগে এই কমিটিগুলি সেটি গভীরভাবে পরীক্ষা করে এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ দেয়। এক বছরের মধ্যে এই জটিল কাজ শেষ করা অনেক সময় সম্ভব হয় না। ফলে বিলের কার্যকরী পর্যালোচনা ব্যাহত হয়। দুই বছরের মেয়াদ বিলের গুণমান বাড়াতে সহায়ক হবে বলে মনে করেন তাঁরা।
সরকারি শিবিরে যদিও এবিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে সূত্রের খবর, বিরোধী পক্ষের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে এবিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠেছে। সরকার মনে করছে, কার্যকারিতা ও স্থায়িত্বের স্বার্থে এই পরিবর্তন সংসদের কাজকর্মকে আরও গতিশীল করে তুলতে পারে।সংসদীয় স্থায়ী কমিটি দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার এক অতি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। এখানেই আইন ও নীতিগত প্রশ্নগুলির বিশদ পর্যালোচনা হয়, যা প্রায়শই সংসদীয় বিতর্কের চেয়ে বেশি বাস্তবসম্মত। সেই প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক—দুই দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।