আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেঙ্গালুরুতে এক র্যাপিডো সফর সম্প্রতি এক যাত্রীর কাছে আস্ত একটি লাইভ সোপ অপেরার রূপ নিয়েছে। কারণ জানেন? তাঁর ক্যাব চালকের অবিরাম ফোনে কথা বলা। প্রায় এক ঘণ্টার সেই যাত্রাপথে স্পিকারে ওই চালকের জীবনের নানা নাটকীয় মুহূর্তের সাক্ষী থাকলেন যাত্রী। প্রেম ভাঙার যন্ত্রণা থেকে শুরু করে আত্মহত্যার হুমকি, প্রতারণার ছক, এমনকী যানজট নিয়ে নালিশ, প্রেমের পরামর্শ- কী ছিল না সেই কথোপকথনে!
ঘটনার কথা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বতন টুইটার) ওই যাত্রী লিখেছেন, "প্রথমে চালকের এক বন্ধু ফোন করে কাঁদতে কাঁদতে জানায়, সে যেই মেয়েটিকে ভালোবাসে, সেই মেয়ে আসলে অন্য কাউকে ভালোবাসে। এই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যা করতে চায়।"
এর পরেই শুরু হয় একের পর এক ফোন কল। ইতিমধ্যেই ভাইরাল হওয়া পোস্টে ওই যাত্রী জানিয়েছেন, এরপর চালক তাঁর অন্য এক বন্ধুকে ফোন করে তাঁর হতাশার কথা শুনে বন্ধুটিকে সব সামলাতে বলেন, যতক্ষণ না তিনি নিজে সেখানে পৌঁছচ্ছেন। পরবর্তীতে আবার অন্য এক জনকে ফোন করে উবের সংক্রান্ত এক জালিয়াতির জেরে কী ভাবে এক জনের আইডি ব্লক হয়ে গিয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা করেন। বেঙ্গালুরুর প্রাণকেন্দ্রের যানজট নিয়ে নালিশ জানাতেও ছাড়েননি আর এক বন্ধুকে।
নাটকের এখানেই শেষ নয়। কিছুক্ষণ পরেই চালক পুনরায় সেই বন্ধুকে ফোন করে তাঁর খবর নেন। তিনি কোথায় আছেন, তা জানার পাশাপাশি প্রায় মিনিট পাঁচেক ধরে প্রেম এবং সম্পর্ক নিয়ে পরামর্শও দেন। এমনকী গোটা সফরে কী কী ঘটল, তার সম্পূর্ণ বৃত্তান্ত নিজের প্রেমিকাকেও ফোনে জানিয়ে দেন তিনি।
পোস্টের শেষে ওই যাত্রী লেখেন, "আমার পরিচিত যে কোনও ব্যক্তির চেয়ে এই মানুষটির সামাজিক জীবন অনেক বেশি আকর্ষণীয়। আমি ওঁকে কী করে বলি যে আমি এখন এই সফর শেষ করতে চাই না?"
তবে এক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃতভাবে শোনা এই কাহিনি নিয়ে নেটদুনিয়ায় ইতিমধ্যেই হাসির রোল উঠেছে। এর পর কী হল, তা জানতে চেয়েছেন অনেকেই।
এক জন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, "ডাইরেক্ট রাইড বুক করো উসকে সাথ অ্যান্ড শেয়ার নেক্সট আপডেট (ওর সঙ্গে সরাসরি পরবর্তী গাড়ির ব্যবস্থা করে পরের খবর জানান)।" আর এক জন লিখেছেন, "এই কারণেই ভারতে কোনও সাজানো নাটকের প্রয়োজন নেই। রাস্তাই এখানে চিত্রনাট্য লেখে।" অন্য এক জনের মন্তব্য, "আপডেট পুরা দিয়া কিজিয়ে ভাই (ভাই, পুরো আপডেটটা দিন)।"
মন্তব্যে আরও এক ব্যক্তি লিখেছেন, "আমি নিজেও এমন ঘটনার সাক্ষী থেকেছি। রাত ১টা হোক বা দুপুর ১টা, ভোর ৩টে হোক বা বিকেল ৩টে, বেঙ্গালুরুর ক্যাব চালকেরা সব সময়েই কারও না কারও সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। বেশ আকর্ষণীয় সামাজিক জীবন তাঁদের।" কয়েক জন নেটিজেন আবার লিখেছেন, "এর পর কী হল? আমরা সেটা জানতে চাই।"
কমেন্ট সেকশনে বেঙ্গালুরুর অনেক বাসিন্দা নিজেদের একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। তাঁদের মতে, গাড়ি চালানোর সময় চালকদের ফোনে কথা বলার দৃশ্য এখানে খুবই সাধারণ। পোস্টটি ইতিমধ্যেই ২২ হাজারেরও বেশি বার দেখা হয়েছে।