হিংসা কাটিয়ে সামশেরগঞ্জে দুর্গাপুজোয় শামিল সব ধর্মের মানুষ
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ওয়াকফ বিল সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানা এলাকার একাধিক গ্রাম। কিন্তু সেই সব ভুলে দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতে উঠেছেন সামশেরগঞ্জের সব ধর্মের মানুষজন। ষষ্ঠীর দিন নিয়ম মেনে জাফরাবাদ, বেতবোনা এবং রানিপুর সহ একাধিক গ্রামের দুর্গাপুজোগুলিতে বোধন হয়েছে। এলাকায় শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখতে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
ধুলিয়ান পুরসভা এবং সংলগ্ন ৯টি পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যেকটি প্রান্তকে সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি পাকুড় রোড এবং ফরাক্কা যাওয়ার রাস্তাতেও রয়েছে নজরদারি। এর ফলে কোনও দুষ্কৃতী অসামাজিক কাজকর্ম করলে দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিন কোম্পানি বিএসএফ এবং আরও তিন কোম্পানি কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশবাহিনীর জাওয়ানরা এখনও নিয়মিত টহলদারি করে। পাশাপাশি রয়েছে রাজ্য পুলিশের আরও এক কোম্পানি র্যাফ জওয়ানরা। পুলিশ প্রশাসনের নজরদারিতে দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে আনন্দে কাটাতে পারবেন বলেই আশাবাদী সামশেরগঞ্জের বাসিন্দারা।
সামশেরগঞ্জ থানার তরফে জানা গিয়েছে, এই থানা এলাকার ১০০–এর বেশি পুজো কমিটিকে দুর্গাপুজোর জন্য আর্থিক অনুদান দিয়েছে রাজ্য সরকার। এর ফলে এই কমিটিগুলি উৎসাহ পেয়েছে। পুরসভা এলাকায় সব মিলিয়ে ১৬টি পুজো হচ্ছে। পাশাপাশি প্রত্যেকটি গ্রামে ১–২ করে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। অনেক পুজো কমিটি জানিয়েছে, এ বছর সরকারি অনুদান না পেলে পুজো করা মুশকিল হত। কারণ অশান্তির কারণে প্রচুর মানুষের অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল। মানুষের হাতে তাই টাকা পয়সাও নেই। তাই এবার চাঁদাও ওঠেনি। উৎসবের সময়ে মানুষের চিন্তা দূর করতে ধুলিয়ান পুরসভার তরফ থেকে বেতবোনা, পালপাড়া, দাসপাড়া এলাকার গৃহহীন মানুষদের চাল, ডাল ও খাদ্যশস্য, শাড়ি, কাপড় বিতরণ করা হয়েছে।
ফরাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম ধুলিয়ান পুরসভার বাসিন্দা। তিনি জানিয়েছেন, ধুলিয়ান বরাবরই সম্প্রীতি ও ঐক্যের শহর। এখনও উৎসবের মরসুমে অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ তাঁকে নতুন পোশাক এবং মিষ্টি পাঠান। অঘটন কাটিয়ে মানুষ ফের নতুন করে সব শুরু করেছে। সামশেরগঞ্জে আর মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নেই। সকল সম্প্রদায়ের মানুষ পুজোর আনন্দে শামিল হয়েছেন।