• উৎসবের মাঝেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা শ্যামনগরে, ট্রেনের ধাক্কায় মৃত স্বামী-স্ত্রী-সহ ৩
    প্রতিদিন | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাকপুর: পঞ্চমীর রাতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা শ্যামনগর স্টেশনে। ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু স্বামী-স্ত্রী-সহ তিনজনের। শনিবার রাতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে শ্যামনগর স্টেশন সংলগ্ন ২৩ নম্বর রেলগেট এলাকায়। দুর্ঘটনাগ্রস্তদের নিয়ে যাওয়ার জন্য লেভেল ক্রসিং গেট খোলা হয়নি। এই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। ঘটনায় তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।

    স্থানীয় ও রেলপুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম তমাল কর (৩৭) ও মৌমিতা সরকার (৩৭) ও সুব্রত রায় (৩৬)। তমাল ও মৌমিতা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। কলকাতার শোভাবাজার এলাকার বাসিন্দা তমালের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল জগদ্দল থানার গুড়দহ এলাকার বাসিন্দা মৌমিতা সরকারের। পঞ্চমীতে গৃহবধূ ঠিক করেছিল স্বামীকে নিয়ে বাপের বাড়ি যাবে।

    সেইমতো তাঁরা ট্রেনে করে শ্যামনগর স্টেশনে নেমেছিল আনুমানিক রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ। প্লাটফর্ম থেকে বেরিয়ে ২৩নম্বর রেলগেটের দিকে যেতে গেলে ৩নম্বর লাইনে পা আটকে পড়ে যান মৌমিতা। তখনই সেই লাইনে থ্রু-ট্রেন আপ বালুরঘাট এক্সপ্রেস চলে আসে। তা দেখে স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে হকচকিয়ে যান তমাল। এমন অবস্থায় দম্পতিকে বাঁচাতে ছুটে যান স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী সুব্রত রায়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তিনজনেই বালুরঘাট এক্সপ্রেসে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়েন।

    এলাকাবাসীর দাবি, ঘটনাস্থলে দম্পতির মৃত্যু হলেও শ্যামনগরের বাসিন্দা সুব্রতর তখনও প্রাণ ছিল। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও রেলগেটে কর্মরত কর্মী সহায়তা করেনি বলে অভিযোগ। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শুভরঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, “সুব্রত তখন কাতরাচ্ছিল। আমরা রেলগেটের কর্মীকে বলি গেট খুলতে, টোটো ঢোকানোর জন্য। যাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু রেলগেট খোলা হয়নি। তাই নিজেরা জখমকে তুলে কোনওমতে রেলগেট পেরিয়ে গাড়ি ধরে হাসপাতালে যাই। কিন্তু দেরি হয়ে যাওয়ায় ওর মৃত্যু হয়।” এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দা। প্রতিবাদে শুরু হয় রেল অবরোধ। প্রায় একঘন্টা বিক্ষোভের পর রবিবার রেলের তরফে আলোচনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে অবরোধ ওঠে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)