চেন্নাই: পদপিষ্টের ঘটনায় মৃত্যুমিছিলের পর শোকস্তব্ধ তামিলনাড়ুর কারুর। দক্ষিণী অভিনেতা তথা টিভিকে দলের প্রতিষ্ঠাতা বিজয়ের রোড শো-তে পদপিষ্টের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪০। এরমধ্যে ৯ জন শিশু। আহত অন্তত ১০০। একদিন পরেও ছিন্নভিন্ন পোশাক, জুতো, থেঁতলে যাওয়া জলের বোতল-ভয়াবহ ওই ঘটনার সাক্ষী হয়ে রয়েছে। স্বজনহারাদের কান্নার মধ্যে দুর্ঘটনার দায় নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। চূড়ান্ত অব্যবস্থা, বিজয়ের বিলম্বে পৌঁছনো নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার মুখে পড়েছে টিভিকে। ঘটনার তদন্ত সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিজয়কে কোনও সভার অনুমতি যাতে না দেওয়া হয়, সেই আর্জি জানিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন পদপিষ্টে জখম এক ব্যক্তি। যদিও টিভিকে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে। এব্যাপারে তামিলনাড়ুর শাসক দল ডিএমকে’র দিকে আঙুল তুলেছে তারা। টিভিকে’র দাবি, সভা চলাকালে ভিড়ের মধ্যে হঠাৎ পাথর ছোড়া হয়। লাঠিচার্জ করে পুলিশ। যার জেরেই হুড়োহুড়ি থেকে ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা! সিবিআই তদন্ত চেয়ে রবিবার মাদ্রাজ হাইকোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছে বিজয়ের দল।
যদিও ডিএমকে এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, দুর্ঘটনার পর চলে গিয়েছিলেন বিজয়। ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝির কটাক্ষ, আমরা তো পালিয়ে যাইনি। ডিএমকে সরকার ইতিমধ্যেই পুলিসের নির্দেশিকা অমান্যের অভিযোগ তুলেছে টিভিকে’র বিরুদ্ধে। ঘটনার তদন্তের জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অরুণা জগদীশনের নেতৃত্বে কমিশন গঠনের কথা জানিয়েছেন তামিলনাড়ুর উপমুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্ট্যালিন। বিদেশ সফর কাটছাঁট করে রবিবার কারুরে আসেন উদয়নিধি। মৃতদের শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।
বিজয় ঘটনায় শোক প্রকাশ করে মৃতদের পরিবার পিছ ২০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও মৃতদের পরিজনদের ২ লক্ষ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তার কথা জানিয়েছেন। এরইমধ্যে বিজয়ের দলের দুই প্রথমসারির নেতার বিরুদ্ধে অনিচ্ছকৃত খুনের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। বিক্ষোভের আশঙ্কায় বিজয়ের বাড়ির সামনে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
শনিবার কারুর জেলায় বিজয়ের সভায় ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। অভিযোগ, ১০ হাজার লোকের সমাবেশের অনুমতি থাকলেও তার থেকে ৫-৬ গুণ বেশি ভিড় হয়েছিল। যদিও টিভিকে-র দাবি, তারা কোনো আইন ভাঙেনি। অভিযোগ উঠেছে, ভিড় বাড়ানোর জন্য নির্ধারিত সময়ের ছয় ঘণ্টা পরে সভায় আসেন বিজয়। সেই অভিযোগও খারিজ করেছে তার দল। টিভিকের দাবি, তামিলাড়ুর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ার জন্যই বিজয়ের আসতে দেরি হয়। তবে হুড়োহুড়ি শুরু হওয়ার পর যে নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়েছিলেন, তা স্বীকার করেছে বিজয়ের দল।