• বন্যপ্রাণীর উপদ্রব, মঙ্গলকাটা বনবস্তিতে দিনে দুর্গাপুজো, রাতে মণ্ডপে জ্বলে প্রদীপ
    বর্তমান | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ধূপগুড়ি: মোরাঘাট জঙ্গল ঘেঁষা বানারহাট ব্লকের মঙ্গলকাটা ফরেস্ট বস্তি। রাত হলেই হাতির দল বেরিয়ে আসার ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক। মাঝেমধ্যে লোকালয়ে চিতাবাঘ বেরিয়ে এসে গৃহপালিত জীবজন্তু টেনে নিয়ে জঙ্গলে চলে যায়। তারপরেও পুজোর বাদ্যি পড়ছে এই বনবস্তিতে। এখানে দেবী আসেন বনদুর্গা রূপে। ডুয়ার্সের জনজাতির আদলে সেজে ওঠেন দুর্গা। 

    তবে অনান্য এলাকার মতো রাতে জাঁকজমক ভাবে পুজো এখানে হয় না, বাজে না ঢাক। হাতি আর চিতাবাঘের ভয়ে একেবারে দিনের আলোতে পুজো সারতে হয় উদ্যোক্তাদের। রাতে কেবল প্রদীপ জ্বালানো হয়। রাত হলেই পুজো মণ্ডপ পাহারায় সজাগ থাকেন পুজো কমিটির সদস্যরা। শহরতলি বা আশেপাশে গ্রামগুলিতে রাতে যখন ধুনুচি নাচের আয়োজন হয়, চলে হইহুল্লোড়, তখন এই এলাকায় এক প্রকার নীরবতা বিরাজ করে। 

    স্থানীয় বাসিন্দা রমেন ওরাওঁ বলেন, বনবস্তি হওয়ার কারণে এই এলাকার মানুষ পুজোর আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকত। তাই ১৬ বছর আগে তৎকালীন ডিএফও কল্যাণ দাসের উদ্যোগে এখানে শুরু হয় পুজো। কালক্রমে তৈরি করা হয় মন্দির। তারপর থেকেই এই পুজোর দায়িত্ব নেন এলাকার আদিবাসী মানুষেরা। রবিবার ষষ্ঠীতে পুজোর উদ্বোধনে হাজির ছিলেন মোরাঘাটের রেঞ্জার চন্দন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, সত্যি জঙ্গল এলাকায় পুজোর এক অন্য মাত্রা রয়েছে। এখানে না এলে বুঝতাম না। 

    পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য সুরেশ ওরাওঁ বলেন, এই এলাকায় ৫০টির মতো পরিবার রয়েছে। তারা পুজো থেকে বঞ্চিত হন বলে এখানে দুর্গাপুজোর সূচনা হয়েছিল বছর ষোলো আগে। সেই থেকে পুজো হয়ে আসছে। তবে আমরা দিনের আলোতেই পুজো করি, কারণ রাতে হাতি সহ বন্যজন্তু চলে আসে। 

     বানারহাট ব্লকের মঙ্গলকাটা বনবস্তির পুজো। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)