সংবাদদাতা, ডোমকল: পঞ্চমীর রাতে ডোমকলে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে খুন করা হল। মৃতের নাম জিন্নাত আনসারি (৪৫)। তাঁর বাড়ি হরিহরপাড়া থানার তরতিপুরে। শনিবার রাতে ডোমকলের গাড়াবাড়িয়ায় মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। রবিবার ভোরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনার রাতেই হাবিবুর রহমান ও হাবিকুল ইসলাম নামের দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটি কাটা ও কেনাবেচার ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন জিন্নাত। পরিবারের অভিযোগ, শনিবার দুপুরে এলাকার কয়েকজন পরিচিত মানুষ তাঁকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর গভীর রাতে ডোমকলের গাড়াবাড়িয়ার মাঠের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে দেখতে পান স্থানীয়রা। তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে ছিল ধারালো অস্ত্রের আঘাতের দাগ। পাশে পড়েছিল তাঁর মোটরবাইকও। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ডোমকল থানার পুলিশ। তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে ডোমকল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার পর রবিবার ভোররাতে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, মৃত্যুর আগে জিন্নাত কয়েকজনের নাম বলে গিয়েছেন। মৃতের ছেলে রাজেশ আনসারি জানান, আমাদের পুরনো একটা বিবাদ ছিল। সেই বিবাদ মিটেও গিয়েছিল। তারপরেও আজ সুযোগ পেয়ে বাবাকে ওরা খুন করেছে। বাবা মারা যাওয়ার আগে কয়েকজনের নাম বলে গিয়েছেন। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।
পুরনো বিবাদ থেকেই এই খুন হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের। পুলিশের একটি বিশ্বস্ত সূত্রের অনুমান, প্রায় এক দশক আগে তাঁদের সঙ্গে এলাকারই এক পরিবারের জমি নিয়ে সংঘর্ষে অপরপক্ষের দু’ জন খুন হয়েছিলেন। সেই ঘটনায় জিন্নাত ও তাঁর পরিবারের কয়েকজনের নাম ওঠে। সম্প্রতি আদালতের রায়ে তাঁদের মধ্যে একজন দোষী সাব্যস্তও হয়। সেই পুরনো ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই কি খুন! নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য রহস্য, তা খতিয়ে দেখছে ডোমকল থানার পুলিশ। তবে নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে পুলিশের এক আধিকারিক জানান, এই ব্যক্তি এলাকায় মাটি কাটা ও বিক্রির কাজ করত। তা নিয়ে ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেও এই খুন হয়ে থাকতে পারে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এদিকে রাতেই ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হাবিবুর রহমান ও হাবিকুল ইসলাম নামের ডোমকলের দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।