নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও বরানগর: মহাষ্টমীর দুপুরে দমদমে আসছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দমদম রোডের হনুমান মন্দির লাগোয়া জ’পুর জয়শ্রীর পুজো মণ্ডপে আসবেন তিনি। ওইদিন অশ্বিনীনগর বন্ধুমহল পুজো মণ্ডপেও যাবেন অভিষেক।
দলীয় সূত্রে খবর, সাধারণত দুর্গাপুজোর কোনও উদ্বোধনে বা পুজো মণ্ডপে দেখা যায় না অভিষেককে। তবে এবার দমদমের দুই পুজো মণ্ডপে তাঁর উপস্থিত হওয়ার খবর ছড়াতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তুমুল শোরগোল। তৃণমূলের পোড় খাওয়া ভোট ম্যানেজারদের ধারণা, শুধুমাত্র মণ্ডপ ঘুরে দেখতে নয়, মহাষ্টমীতে মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে বড় কোনও বার্তাও দিতে পারেন তিনি।
অশ্বিনীনগর বন্ধুমহল ক্লাবের পুজোর মূল উদ্যোক্তা তৃণমূলের দমদম-বারাকপুর সাংগঠনিক জেলা যুব সভাপতি দেবরাজ চক্রবর্তী। জ’পুর জয়শ্রী ক্লাবের পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা দক্ষিণ দমদম পুরসভার পৌরপ্রধান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাস। পুজোয় দমদম অঞ্চলের বুকে অভিষেকের এই প্রথম আগমন। যদিও বিধানসভার এলাকা বিন্যাস অনুযায়ী, দু’টি পুজো কমিটিই রাজারহাট-গোপালপুর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ছে। কিন্তু এলাকাগতভাবে দু’টি পুজোকেই দমদম অঞ্চলের মধ্যে ধরা হয়। এই দুই পুজোয় অভিষেকের এহেন কর্মসূচিকে ঘিরে তুমুল রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়েছে। তবে দমদম রোডের হনুমান মন্দির লাগোয়া জ’পুর জয়শ্রীর পুজোর এবারই প্রথম বছর। কিন্তু নিজেদের পুজোর থিমে বাংলা ও বাঙালির উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে এই পুজো কমিটি। শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার জন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্যে ভয়াবহ অত্যাচার, বাংলাদেশে পুশব্যাকের নিদারুণ চিত্র মণ্ডপে তুলে ধরা হয়েছে। প্রথম বছরেই পুজো কার্যত সুপারহিট। সেখানে উপচে পড়ছে জনতার ভিড়। তার মধ্যে এই মণ্ডপে অভিষেকের আসা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। শুধু তাই নয়, মাত্র তিনদিন আগেই তৃণমূলের সমস্ত শিক্ষক সংগঠনের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নতুন করে কমিটি তৈরি হবে বলে তৃণমূল বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে। উল্লেখ্য, শিক্ষক সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী তথা দমদমের বিধায়ক ব্রাত্য বসু। এই অবস্থায় দমদমের বুকে অভিষেকের আসার পিছনে অনেকেই রাজনৈতিক অঙ্ক খোঁজার চেষ্টা করছেন। মহাষ্টমীতে ব্রাত্য বসুর সঙ্গে অভিষেকের সাক্ষাৎ হয় কি না, তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, অভিষেকের কাছে পুজোয় আসার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। তিনি সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে আসছেন। এর নেপথ্যে রাজনীতির অঙ্ক খোঁজা অর্থহীন।