কোলে এক বছরের ছেলে, ধামুয়া থেকে বারুইপুরের মণ্ডপে গৃহবধূ
বর্তমান | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, বারুইপুর ও সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: দৃশ্য এক: গৃহবধূ রমা ঘোষ। বাড়ি ধামুয়ায়। সন্ধ্যার আগেই এক বছরের ছেলেকে কোলে নিয়ে বারুইপুরের পুজো মণ্ডপের লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। ছেলেকে মা দুর্গা দেখাতেই হবে। তাই বাড়ির কাজ সামলে ছেলেকে নিয়ে ট্রেন চেপে সোজা বারুইপুর স্টেশনে হাজির। তারপরে ৪ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে নেমে পুজো মণ্ডপের লাইনে।
দৃশ্য দুই: কার্তিক হালদার। বাড়ি মগরাহাট। দেড় বছরের মেয়েকে নিয়ে বাবা পুজো মণ্ডপের লাইনে। মাঝখানে মেয়ে একবার বায়না করে উঠল, আইসক্রিম খাবে। বাবা মেয়ের আবদার মিটিয়ে আবার লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লেন।
সন্ধ্যার পরে বারুইপুরের পুজো মণ্ডপগুলিতে এমন নানা চিত্র। সেলফি তোলার ঝোঁক যুবক-যুবতী, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে। মণ্ডপে প্রতিমা দেখতে ভিড় প্রবীণদেরও। তবে হেঁটে আসতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। পুজো মণ্ডপ ঘুরে মানুষ ঢু মারছে রাস্তার পাশে রেস্তরাঁয়। জমিয়ে খাওয়া সেরে আবার মণ্ডপ দেখতে ছুটছে তারা। এদিকে, মূল রাস্তায় টোটো, অটোর চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হলেও অলিগলিতে টোটো, অটোর ভিড়ে নাজেহাল হচ্ছে দর্শনার্থীরা। পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে পরিস্থিতি সামলাতে।
সোনারপুর, নরেন্দ্রপুরের পুজো মণ্ডপগুলিতেও ভিড় বাড়ছে সন্ধ্যাতেই। পুজোকর্তাদের আশা, রাতে আরও ভিড় বাড়বে মণ্ডপে। তবে বৃষ্টি যাতে না হয়, তার জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা চলছে নিরন্তর। বাইক, স্কুটিতে প্রেমিক প্রেমিকা, দম্পতি ছুটে বেড়াচ্ছে নানান মণ্ডপে। পুজো বলে হেলমেটে ছাড়। পুলিশকে কাকু বলে মিনতি করলেই নাকি মিলছে ছাড়।
ভিড় ক্যানিংয়ের পুজো মণ্ডপগুলিতেও। বাসন্তী, গোসাবা থেকে মানুষজন চলে এসেছে ক্যানিং-এ প্রতিমা দর্শন করতে। পাশাপাশি ষষ্ঠীর সকাল থেকেই উৎসবে মাতলেন কাকদ্বীপের মহকুমাবাসী। এবছর প্রবল বৃষ্টির কারণে উৎসবের আনন্দ থেকে সরে এসেছিলেন এই এলাকার বাসিন্দারা। কারণ এখানকার প্রায় প্রতিটি পুজো মণ্ডপের কাজ সম্পূর্ণ করতে অনেক সময় লেগে গিয়েছে। এখনও বেশ কয়েকটি পুজো মণ্ডপ তৈরির কাজ চলছে। নিম্নচাপের প্রবল বৃষ্টির কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এর মধ্যে রবিবার সকালে সূর্যের আলো ফোটার সঙ্গেই ষষ্ঠীর আনন্দে মেতে উঠলেন এখানকার বাসিন্দারা। এদিন সকালেও এই এলাকায় হালকা বৃষ্টি হয়েছিল। তবে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই সবাই ষষ্ঠীর পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার জন্য পুজো মণ্ডপগুলিতে ভিড় জমিয়েছিলেন। অন্যদিকে, এই মহকুমার গ্রামীণ অঞ্চলগুলিতে এখনও পুজো শুরু হয়নি। আজ, মহাসপ্তমী থেকে প্রতিটি মণ্ডপে পুজো শুরু হয়ে যাবে। তবে ষষ্ঠীর ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য কাকদ্বীপ শহরে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। চৌরাস্তার মোড় সহ তিনটি জায়গায় পুলিশ ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। মহেশতলা ও বজবজের পুজো মণ্ডপগুলিতে ভিড় বেড়েছিল এদিন। পুজোর বাকি দিনগুলিতেও ভালোই ভিড় হবে বলে আশা পুজো কমিটির কর্তাদের।