• পুজোয় বুক স্টলে কমরেডদের জমায়েত দেখাতে মরিয়া CPM, বেঁধে দেওয়া হল রস্টার!
    প্রতিদিন | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: সামনে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচন। তাই পুজোয় বুক-স্টল সামনে রেখে আমজনতার সাড়া পেতে মরিয়া বঙ্গ সিপিএম। ভোট বাক্সে শূন্যের গেরো কাটবে কি না সেটা লাখ টাকার প্রশ্ন, কিন্তু বুক-স্টলে কোনওভাবেই পিছিয়ে থাকতে চাইছে না আলিমুদ্দিন। শুধু কলকাতাতেই ১১৯টি স্টল করা হয়েছে। ১২ থকে ১৩ ধরনের নতুন বই এবার রাখা আছে বুক-স্টলে। অন্যান্যবারের মতো এ বছরও সিপিএমের বুক-স্টলে মতাদর্শের প্রচারে বই যেমন রয়েছে, তেমন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর লেখা একাধিক নাটক, প্রবন্ধ, কবিতার বই। দলের আরেক প্রয়াত নেতা সীতারাম ইয়েচুরির লেখা বইও এবার জায়গা করে নিয়েছে বুক-স্টলে।

    বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের যেভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে সেই পরিস্থিতিতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গুরুত্ব, ইতিহাস বিশেষভাবে তুলে ধরাও এবার লক্ষ্য সিপিএম নেতৃত্বের। ন্যাশনাল বুক এজেন্সি ও বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু ভাষায় লেখা রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, দর্শন, জীবনী, স্মৃতিচারণ, অনুবাদ, সাহিত্য, গল্প, উপন্যাস, শিশু ও কিশোর সাহিত্যের বহু মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য বইও এবার স্থান পেয়েছে বুক-স্টলে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বইও আছে। সিপিএমের কলকাতা জেলার সম্পাদক কল্লোল মজুমদার জানালেন, ‘‘কলকাতায় এবার ১১৯টি বইয়ের স্টল হয়েছে। যাদবপুর, বাগবাজার, নেতাজিনগর-সহ কয়েকটি জায়গায় বড় স্টল হয়েছে।’’ গোটা রাজ্যে দলের বুক-স্টলের সংখ‌্যা দু’হাজারের ঘর ছুঁয়ে যাবে বলে মনে করছেন প্রবীণ সিপিএম নেতা রবীন দেব। সিপিএম সূত্রে খবর, এবার বুক-স্টল যাতে জমজমাট রাখা যায়, সেজন‌্য এলাকার পার্টির নেতা-কর্মী-সমর্থকদের কাছে বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছিল। বাধ‌্যতামূলক উপস্থিতি থাকতে হবে।

    পুজোর ক’দিন সন্ধ‌্যা থেকে রাত পর্যন্ত পার্টি সদস‌্যদের বুক-স্টলে দায়িত্ব বণ্টনও করা হয়েছে। বুড়ি ছোঁয়া দিয়ে কমরেডদের পালালে হবে না। থাকতে হবে স্টলে। ভিড় বাড়াতে হবে স্টলগুলিতে। পার্টি সূত্রে খবর, সামনে নির্বাচন, সেই কারণেই এমনই নির্দেশ এসেছে। পুজোর সময় অন্তত স্টলে বই বিক্রির বহর দেখিয়ে জনসমর্থন বাড়ছে বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন নেতারা। কিছুদিন বাদে ভোটের বাক্সে অবশ্য জনসমর্থন বৃদ্ধির কোনও প্রতিফলন থাকবে কি না তা নিয়ে নিশ্চিত নন রাজ‌্যনেতারাও। দল ক্ষমতায় যখন ছিল, তখন সিপিএমের পুজোর স্টলে ভিড়ও প্রচুর থাকত। নেতাদের সুনজরে থাকতে ঠাকুর দেখার ফাঁকে মার্কসবাদী সাহিত্য একটু ঘেঁটে দেখার লোকেরও অভাব ছিল না। কিন্তু ২০১১-র পর ছবিটা বদলে গিয়েছে। অধিকাংশ মণ্ডপের বাইরে আর সেই লাল শালুতে মোড়া চিরাচরিত সিপিএমের বইয়ের স্টল খুঁজে পাওয়া যায় না। অল্প কয়েকটি বাছাই করা জায়গা ছাড়া স্টলে সাধারণ মানুষের ভিড় দেখা যায় না। কোথাও কোথাও কমরেডরা বুড়ি ছোঁয়ার মতো স্টলে হাজির হলেও রাত নামতেই বেপাত্তা হয়ে যান। শূন্য স্টলগুলো যেন সিপিএমের কঙ্কালসার চেহারাটা নিয়ে মানুষের সামনে দঁাড়িয়ে থাকে। যাদবপুর এইট-বি, বাগবাজার-সহ আরও কয়েকটি স্টলে এখনও কিছুটা ভিড় হয়, সেখানকার বই বিক্রির হিসাব দিয়েই জনসমর্থন বাড়ার দাবি করেন সিপিএম নেতারা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)