বর্ধমানের কালনায় নিজেই নিজের পুজোর ব্যবস্থা করেছিলেন মহিষাসুরমর্দিনী!
আনন্দবাজার | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শারদোৎসবের আবহেই আসুন জেনেই বাংলার এক শতাব্দীপ্রাচীন পুজো সম্পর্কে। যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক অনন্য কিংবদন্তী।
এই পুজো হল বর্ধমানের কালনার (অম্বিকা কালনা) মা মহিষাসুরমর্দিনীর পুজো।
কথিত আছে, স্বপ্নাদেশ পেয়ে মায়ের পুজো শুরু করেছিলেন রানাঘাটের ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান ঈশ্বরীপ্রসাদ পালচৌধুরী।
পালচৌধুরীদের রানাঘাটের বাড়িতে দেবীর পুজো আগে থেকেই হত। কিন্তু, কয়েকশো বছর আগে সেই পুজোয় নাকি বিঘ্ন ঘটে।
এ দিকে, ঈশ্বরীপ্রসাদ ব্যবসার কাজে কালনায় একটি আড়ত সামলাতেন। সেই সময়েই তিনি জগজ্জননীর স্বপ্নাদেশ পান।
দেবী তাঁকে জানান, রানাঘাটের মহিষাসুরমর্দিনীর প্রতিমার একটি পাটা গঙ্গায় ভেসে কালনায় নদীর তীরে পৌঁছেছে। সেই পাটায় প্রতিমা গড়েই কালনা শহর বা তৎকালীন নয়াগঞ্জে পুজো শুরু করতে হবে। তেমনটাই করেন ঈশ্বরীপ্রসাদ।
এর পর থেকেই কালনায় এই দুর্গাপুজো শুরু হয়। কিন্তু, পুজো শুরু করা হয় শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা অথবা শ্রাবণ মাসের শুক্ল পক্ষের সপ্তমী তিথি থেকে। যা চলে টানা চার দিন।
এই প্রথা আজও মানা হয়। দশভুজা এখানেও মহিষাসুরমর্দিনী রূপে অধিষ্ঠাত্রী হলেও তাঁর দুই পাশে থাকেন জয়া ও বিজয়া।
তৎকালে এই এলাকা বর্ধমান রাজ পরিবারের অধীনস্ত ছিল। তাই, প্রাচীন প্রথা মেনে আজও পুজোয় প্রথম সঙ্কল্প করা হয় বর্ধমানের রাজার নামে। দ্বিতীয় সঙ্কল্প করা হয় পালচৌধুরী পরিবারের নামে।
পুজোয় চণ্ডীপাঠ, ছাগ বলি, ধুনো পোড়ানো, ভোগারতির মতো রীতি আজও পালন করা হয়। ভক্তরা নদীতে স্নান করে দণ্ডী কেটে মায়ের কাছে পৌঁছন। শোনা যায়, আগেকার দিনে মনোস্কামনা পূর্ণ হলে ভক্তরা মা মহিষাসুরমর্দিনীকে কাঁসার বাসনপত্র নিবেদন করতেন।