• বিজেপি মুখপাত্রের ‘মারণ হুমকি’ ঘিরে তীব্র বিতর্ক, কংগ্রেসের চিঠি অমিত শাহকে...
    আজকাল | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর উদ্দেশে সরাসরি মারণ হুমকি ঘিরে জাতীয় রাজনীতিতে তীব্র চাঞ্চল্য। কেরলের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের লাইভ বিতর্কে বিজেপি মুখপাত্র পিন্টু মহাদেব প্রকাশ্যে বলেন— “রাহুল গান্ধীকে বুকে গুলি করা হবে”। এই মন্তব্যকে ‘ভয়ঙ্কর’ এবং ‘অসহনীয় সীমালঙ্ঘন’ বলে বর্ণনা করে কংগ্রেস কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখে অবিলম্বে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।

    কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা ও সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারপার্সন কে. সি. ভেনুগোপাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে লেখেন—“বিজেপি মুখপাত্র পিন্টু মহাদেবের মন্তব্য নিছক জিভ ফসকে যাওয়া নয়। এটি শীতল মাথায় দেওয়া এক হত্যার হুমকি। এর মাধ্যমে কেবল রাহুল গান্ধীর জীবনই বিপন্ন করা হয়নি, ভারতীয় গণতন্ত্রের চেতনাকেও আঘাত করা হয়েছে।”

    তিনি আরও লেখেন, “মহাদেব প্রকাশ্যে বলেছেন ‘রাহুল গান্ধীকে বুকে গুলি করা হবে’। স্বাধীন ভারতের দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী—ইন্দিরা গান্ধী ও রাজীব গান্ধীর হত্যার প্রেক্ষাপট টেনে এনে এই মন্তব্য কার্যত হিংসাকে  উসকে দেওয়ার সমান।”

    কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগেও সিআরপিএফ রাহুল গান্ধীর নিরাপত্তা নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছিল। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে পাঠানো একটি ফাঁস হওয়া চিঠিতেও রাহুলের জীবনে সম্ভাব্য হুমকির উল্লেখ রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বিজেপি মুখপাত্রের এমন মন্তব্য কেবল ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, বরং সাংবিধানিক গ্যারান্টিকেও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়।

    অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি (এআইসিসি) তাদের সরকারি ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছে—“বিজেপি সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে! বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে সরাসরি মৃত্যুহুমকি দেওয়া হয়েছে জাতীয় টেলিভিশনে। এটি কি কোনও বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত? বিজেপি কি হিংসা  ও অপরাধমূলক ভয় দেখানোকে স্বাভাবিক করে তুলতে চাইছে?”

    কংগ্রেসের দাবি

    ১. বিজেপি নেতৃত্বের তরফ থেকে প্রকাশ্য ও নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা।

    ২. রাজ্য পুলিশের মাধ্যমে অবিলম্বে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা।

    ৩. অভিযুক্ত বিজেপি মুখপাত্রের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

    ভেনুগোপাল সতর্ক করেছেন, সরকার যদি এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নেয়, তবে তা কার্যত ‘সহযোগিতা বা মদত’ হিসেবে ধরা হবে।

    বিতর্কিত মন্তব্যের পর এখনো পর্যন্ত বিজেপির তরফ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিষয়টি কেবল এক মুখপাত্রের সীমাবদ্ধ মন্তব্য নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সহিংসতার স্বাভাবিকীকরণের প্রবণতাকে উসকে দিতে পারে।

    কংগ্রেসের বক্তব্য—“রাহুল গান্ধীর নির্ভীক লড়াই আরএসএস-বিজেপি মতাদর্শকে কাঁপিয়ে তুলেছে। কিন্তু কোনও হুমকি বা হিংসা  তাঁকে দমাতে পারবে না। তিনি জনগণের পক্ষে এবং সংবিধান রক্ষার জন্য তাঁর সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন। গোটা দেশ যে কোনও ধরনের ভয় দেখানো ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে একসাথে রুখে দাঁড়াবে।” এই ঘটনার পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নিরাপত্তা, গণতান্ত্রিক ভদ্রতা ও সহিংস রাজনৈতিক ভাষার প্রশ্নে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)