পণের দাবিতে চরম নির্যাতন, তবুও শান্তি হল না যুবকের! তিন তালাক দিতেই থানায় ছুটলেন স্ত্রী ...
আজকাল | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: আরও পণের দাবি। তাই বিয়ের পর থেকেই শুরু চরম হেনস্থা। শেষমেশ স্ত্রীকে হোয়াটসঅ্যাপে তিন তালাক দিলেন এক যুবক। যে ঘটনাটি ঘিরে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এক যুবতী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে বাসেরা গ্রামে। সোমবার এক ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। হোয়াটসঅ্যাপে স্ত্রীকে তিন তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। পণের দাবিতে স্ত্রীকে হোয়াটসঅ্যাপে তিন তালাক দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, হাসান নামের যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন আসমা নামের এক যুবতী। রবিবার স্বামীর পাশাপাশি শাশুড়ি, আরও দুই দেওর সালিম ও শাকিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। গত ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে হাসান ও আসমা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকেই আরও পণের দাবিতে চূড়ান্ত হেনস্থার শিকার হয়েছেন আসমা।
অভিযোগ দায়ের করার পর থেকেই যুবক পলাতক। তাঁর খোঁজে ইতিমধ্যেই তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। হঠাৎ তিন তালাক দেওয়াও নিষিদ্ধ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত বছর আগস্ট এই রাজ্যেই তিন তালাকের আগে আরও এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। বিয়ের পর অযোধ্যা ধাম ঘু্রতে গিয়েই বিপত্তি। অযোধ্যার উন্নয়ন দেখে চোখ ছানাবড়া তরুণীর। স্বামীর সামনেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন স্ত্রী। এর থেকেই শুরু ঝামেলা। মোদি ও যোগীর প্রশংসা শুনেই স্ত্রীকে চরম শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকেরা। এরপর স্ত্রীকে তিন তালাক দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচে। গত বছর ডিসেম্বরে বিয়ের পর অযোধ্যায় গিয়েছিলেন তরুণী। অযোধ্যার রাস্তাঘাট, আলো দেখে চমকে গিয়েছিলেন তিনি। স্বামীর কাছে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসাও করেছিলেন। যা শুনেই তাঁর মুখে ফুটন্ত ডাল ছুড়ে মেরেছিলেন স্বামী। এখানেই থামেননি। বাড়ির সকলের সামনে স্ত্রীকে তিন তালাক দেন অভিযুক্ত স্বামী।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতেও শ্বশুর বাড়ির নির্যাতনের বিরুদ্ধে তরুণী একটি ভিডিও পোস্ট করেন। মহল্লা সরাইয়ের বাসিন্দা বলে পরিচয় দিয়ে তিনি জানান, বিয়ের পর ঝামেলার পর আত্মীয়রা একাধিকবার মিটমাট করার চেষ্টা করছিলেন। তারপরেও অত্যাচার থামেনি। শাশুড়ি, ননদরাও তাঁকে খুন করার চেষ্টা করেছিলেন।
পুলিশের কাছে তরুণী জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকে প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন করতেন স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকেরা। স্বামী সহ মোট সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন তরুণী। ওই সাতজনের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন, খুনের হুমকি, পণের জন্য অত্যাচার এবং মুসলিম মহিলা (সংরক্ষণ) আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এ পর্যন্ত কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালেই তিন তালাক প্রথা নিষিদ্ধ করেছিল মোদি সরকার।