সপ্তমীতে মৃত্যুর কালো ছায়া মালদহে, দুই সন্তানকে ‘খুন’ করে আত্মঘাতী মা!
প্রতিদিন | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বাবুল হক, মালদহ: সপ্তমীর দিনই মৃত্যুর করাল ছায়া! উৎসবের সমস্ত আলো নিভে গেল মালদহের পরিবারে। ৭ বছরের পুত্রসন্তান এবং ৬ মাসের শিশুকন্যাকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে। তারপর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন মা-ও চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদহ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাচামারি গভর্নর্মেন্ট কলোনির নিচু পাড়ায়। এই ঘটনায় উৎসবের আনন্দই ম্লান হয়ে যায় গোটা এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আত্মঘাতী গৃহবধুর নাম রূপালি হালদার, বয়স ২৮ বছর। মৃত পুত্র সন্তান অয়ন হালদারের বয়স সাত বছর এবং কন্যার বয়স ৬ মাস মাত্র। খবর পেয়ে মালদহ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ তিনটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বামী অসিত হালদারকে নিয়ে স্ত্রী রূপালি কিছুদিন ধরে নিজের বাপেরবাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে থাকছিলেন। তিন-চার মাস আগে থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে হামেশাই ঝামেলা লেগে থাকত। রবিবার, ষষ্ঠীর রাতেও রূপালির স্বামী অসিত ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ঠাকুর দেখতে যেতে চাইলে স্ত্রী আপত্তি করেন। এই নিয়েই গন্ডগোলের সূত্রপাত। পরবর্তীতে দুই সন্তানকে নিয়ে ওই গৃহবধূ তাঁর নিজের ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। স্বামী অন্যত্র ঘুমোতে চলে যান। সোমবার সকাল দশটা বেজে গেলেও রূপালি ঘুম থেকে না ওঠায় বাড়ির লোকজনের সন্দেহ হয়। তাঁরা ডাকাডাকি করেন। তারপর দরজা ভেঙে ফেলেন। দেখা যায়, দুই সন্তানের নিথর দেহ খাটের উপর পড়ে রয়েছে এবং রূপালির ঝুলন্ত দেহ সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে। পরে ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে মালদহ থানার পুলিশ দেহগুলি উদ্ধার করে। স্বামী অসিত হালদারকে পুলিশ আটক করে।
আত্মঘাতী গৃহবধূর শ্বশুর তরুণ হালদার জানান, ”ছেলে এবং বউমার মধ্যে রাতে ঝামেলা হয়েছিল, আমার নাতিকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া নিয়ে। আমার বউমা বাধা দিচ্ছিল। আমার নাতিকে সে ছেলের সঙ্গে ঘুরতে পাঠাবে না বলে। সেই নিয়ে ঝামেলা হয় এবং আজ সকালে দেখি এই ঘটনা।” খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্যাম মণ্ডল। তিনি এই মর্মান্তিক ঘটনায় পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।