• সপ্তমীতে সল্টলেকের 'দুর্গাবাড়ি'-র পুজোর সেরার শিরোপা, বনেদি বাড়ির ঐতিহ্য নিয়ে ঝলমলে আয়োজন...
    আজকাল | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • শারদ উৎসব মানেই বাঙালির প্রাণের উৎসব। আর এই উৎসবের আবহে, আলোর রোশনাই, ঢাকের আওয়াজ আর ভক্তির পরশে জেগে উঠেছে দুর্গাবাড়ি। রায়চৌধুরী পরিবারের পুজোয় ইতিহাস আর বর্তমান মিলেমিশে এক।

    এই বছরই সল্টলেকের দুর্গাবাড়িতে শুরু হয়েছে দুর্গাপুজো। যদিও ‘নতুন’ এই দুর্গাবাড়ি, তার শিকড় ছড়িয়ে রয়েছে বহু প্রাচীন ইতিহাসে।এই পরিবারের পক্ষ থেকে সত্যম রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, তাঁদের পরিবারে দুর্গাপুজোর সূচনা হয়েছিল বহু বছর আগে হুগলি জেলার গুড়াপ থানার অন্তর্গত গুড়বাড়ি গ্রামে। সেখানে ছিল বিস্তৃত আমবাগান ও সবুজে ঘেরা দু'টি বাড়ি—সেই মনোরম পরিবেশেই শুরু হয়েছিল মা দুর্গার আরাধনা। প্রায় তিন শতাব্দী ধরে চলা সেই পুজো ছিল কেবল এক ধর্মীয় আচার নয়, বরং এক সামাজিক মিলনক্ষেত্র। শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি আর ঢাকের গর্জনে গমগম করত গোটা গ্রাম। প্রতিমায় প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হত একান্ত ভক্তির সঙ্গে, আর পুজোর ক’দিন গ্রাম হয়ে উঠত এক বৃহৎ পরিবার।

    কিন্তু সময়ের আবর্তনে একদিন হারিয়ে যায় সেই পুজো। দুর্গাদালান হয় অতীত, থেমে যায় ঢাকের সুর, আর কালের গর্ভে মুছে যায় এক দীর্ঘ ঐতিহ্য। তবে ইতিহাসের সেই বন্ধ দরজাকে আবার নতুন করে খুলে দিতেই এই আয়োজন। বর্তমান প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে আবার শুরু হয়েছে পারিবারিক দুর্গাপুজো—নতুন বাড়িতে হলেও পুরনো ঐতিহ্যকে বুকে নিয়ে।

    এই নবপ্রয়াসকেই স্বীকৃতি দিল জি ২৪ ঘণ্টা। 'শারদ অনন্য সম্মান' দিয়ে সম্মানিত করা হল এই দুর্গাবাড়ির পুজোকে। পুরস্কার গ্রহণ করে টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সত্যম রায়চৌধুরী বলেন, “অবশ্যই একটা স্বীকৃতি পেতে ভাল লাগে। এটা ভালবাসার স্বীকৃতি। খুব ভাল লাগছে। ধন্যবাদ জি ২৪ ঘণ্টাকে।”

    এই বছরের সপ্তমীতে দুর্গাবাড়ি রূপ নেয় এক প্রাণবন্ত উৎসবে। সকালে শুরু হয় পুজো, ঢাকের বাদ্য আর ধূপধুনোর গন্ধে গৃহপ্রাঙ্গণ ভরে ওঠে পবিত্রতায়। দূরদূরান্ত থেকে আসা অতিথিদের আনাগোনা, পরিবার-পরিজনের হাসি-আনন্দ, আর পরম্পরার পুনর্জাগরণে দুর্গাবাড়ি হয়ে ওঠে এক প্রাণবন্ত মিলনমেলা।

    পুজোর বিশেষ আকর্ষণ ছিল ভুরিভোজ। খিচুড়ি, লাবড়া, বেগুনি, টক-মিষ্টি চাটনি, রসগোল্লা ও পায়েসে আপ্যায়িত হন আগত অতিথিরা। দুপুরের আহার শেষে সন্ধ্যায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ভক্তিমূলক গান এবং পারিবারিক আড্ডায় একদিকে যেমন ছিল আবেগের ছোঁয়া, তেমনই ছিল বাঙালির প্রাণের সুর ও সঙ্গীত। পরিবারের ছোট থেকে বড়, সকলেই অংশগ্রহণ করেন এই আনন্দঘন পরিবেশে।
  • Link to this news (আজকাল)