• দেবী আরাধনার দিনই কন্যা সন্তানকে হত্যা, মেয়েকে আছাড় মেরে খুন করল বাবা...
    আজকাল | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুর্গাপুজোর মধ্যেই নিজের কোলের সন্তানকে খুন করে আত্মঘাতী হল বাবা। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানার অন্তর্গত দেবীদাসপুরে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা গ্রামে। পুলিশ ইতিমধ্যে দেহ দু'টি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে সামশেরগঞ্জ থানার অন্তর্গত ভাসাইপাইকর পঞ্চায়েতের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা বছর কুড়ির সুলেখা খাতুনের সঙ্গে পেশায় রাজমিস্ত্রি নঈম আখতারের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের সময় সুলেখার বাড়ির পরিবারের লোকেরা নঈমকে সাধ্যমত পণ দিলেও অভিযোগ সে আরও পণ আনার জন্য মাঝেমধ্যেই স্ত্রী, সুলেখার উপর অত্যাচার চালাত। 

    স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন ,বছর দু'য়েক আগে ওই দম্পতির একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। অভিযোগ কন্যা সন্তান হওয়ার পর সুলেখার উপর নঈম এবং তার পরিবারের সদস্যদের অত্যাচার আরও বাড়ে। রবিবার রাতে ওই দম্পতির মধ্যে ব্যাপক অশান্তির সময় হঠাৎই নঈম, সুলেখার কোল থেকে নিজের একমাত্র কন্যা সুলাইমা খাতুনকে কেড়ে নেয় এবং সকলের সামনে নিজের একমাত্র কন্যাকে রাগের মাথায় বাড়ির উঠোনে আছাড় মারে। রক্তাক্ত হয়ে উঠানের মেঝেতে পড়ে কাঁদতে থাকলে আশেপাশের প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। ছোট্ট ওই কন্যা সন্তানকে জঙ্গিপুর  হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। 

    রাগের মাথায় নিজের কন্যাকে খুন করার পর থেকেই নঈমের খোঁজ পাচ্ছিল না গ্রামবাসীরা। পরে নঈমের পরিবারের লোকেরা খবর পান সামশেরগঞ্জের  জয়কৃষ্ণপুর এলাকায় রেললাইনের ধারে একটি মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। তাঁরা দ্রুত সেখানে ছুটে যান এবং দেহটি  শনাক্ত করেন। সুলেখার পরিবারের এক সদস্য বলেন, নঈমের অত্যাচারে মাঝেমধ্যেই সুলেখা বাবার বাড়িতে গিয়ে থাকত। অভিযোগ সম্প্রতি  নঈম সুলেখাকে বিবাহ বিচ্ছেদ দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু একমাত্র কন্যাকে নিয়ে কোথাও চলে যাওয়ার জায়গা না থাকায় সুলেখা এই বিবাহ বিচ্ছেদে রাজি ছিলেন না। এই কারণে ওই দম্পতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই তিক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। জানা গিয়েছে, বিবাহ বিচ্ছেদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই দম্পতির মধ্যে ঝগড়া চলার সময় রাগের মাথায় নঈম নিজের একমাত্র মেয়েকে খুন করে এবং তারপর আত্মঘাতী হয়।

    গত আগস্ট মাসে শিলিগুড়িতে সাড়ে তিন মাসের কন্যা সন্তানকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল বাবার বিরুদ্ধে। সদ্যোজাতকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার বাবাকে। ধৃতের নাম রাহুল মাহাতো। পেশায় গাড়িচালক। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছিল, দুই বছর আগে রাহুল মাহাতোর সঙ্গে বিহারের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা মাহাতোর বিয়ে হয়েছিল। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই একাধিকবার টাকার দাবিতে প্রিয়াঙ্কার উপর নির্যাতন শুরু হয়। কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর থেকেই প্রিয়াঙ্কাকে আরও বেশি মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হত বলে অভিযোগ। মেয়ের জন্মের পর থেকে তাঁকে বাড়ির লোকজন প্রায় এড়িয়েই চলত বলে অভিযোগ।

    মৃত শিশুর মা প্রিয়াঙ্কা মাহাতো বলেন, “কন্যাসন্তান হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অশান্তি চলছিল৷ মেয়েকে ছুঁয়ে দেখত না৷ নানা হুমকি দিত। রাতে মেয়ে ঘুমানোর আগে পর্যন্ত খেলা করছিল৷ ঘুমন্ত অবস্থাতেই ভোররাতে মেয়েটাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলল। সকালে মেয়েকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।”
  • Link to this news (আজকাল)