• চেনা আয়োজনে নতুন পুজো খুঁজে ফেরে প্রবাসী
    আনন্দবাজার | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ঢাকে কাঠি পড়ল। হান্সলোর বেল রোডের ব্যাঙ্কয়েটিং হল আলো করে উপস্থিত হয়েছেন জগজ্জননী মা দুর্গা। প্রবাসীর ব্যবস্থাপনায় এই নিয়ে চতুর্দশবার পশ্চিম লন্ডনে পূজিত হলেন দুর্গতিনাশিনী দেবী। প্রবাসের পুজোয় দেশের মতো দেবী প্রতি বছর নতুন প্রতিমায় উন্মোচিত হন না। অথচ ফি বছর পুজো উদ্ভাসিত হয় নতুনত্বের সব রকম জৌলুস নিয়েই।

    হাল্কা শীত, ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যে শরতের সোনাঝরা রোদ্দুর খুঁজে বেড়ানো বাতুলতা মাত্র। সেই ফাঁকটুকু বাদ দিলে, প্রবাসীরপুজোমণ্ডপে আলো ও রোশনাইয়ের হই হই উৎসবে কোনও কিছুরই ঘাটতি চোখে পড়ে না।

    ষষ্ঠী থেকে দশমী দু‘বেলা ভোগের লম্বা লাইন। সামাজিকতার পাশাপাশি রসনার তৃপ্তিআস্বাদনের ভরপুর ব্যবস্থা ফি বছর। এ বার যেমন খিচুড়ি, লাবড়া, চাটনি, পাঁপড়ের পাশাপাশি ছিল বাসন্তী পোলাও, আলু-পটল, লুচি-আলুরদম এবং শেষ পাতে মিষ্টি।

    প্রবাসীর পুজোর পরিচিতি এখন শুধুমাত্র লন্ডনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ব্রিটেনের বহু জায়গা থেকে দর্শনার্থীরাও আসেন। দুর্গাপুজোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলে পেটপুজোও। সেই সঙ্গে সাংস্কৃতিক আয়োজন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তাতে ভিড় এবং ব্যবসা দু’টোই ফুলে ফেঁপে ওঠে।

    আশ্বিনের শারদ প্রাতে দেবী যখন কৈলাস থেকে ধরাধামে আসেন, তখন এটাই হান্সলোয় পরিচিত ছবি। পুজোর ফুল, ধুপ, আতরের স্বর্গীয় গন্ধের সাথে সুস্বাদু জাগতিক খাবারের রসালো গন্ধ মিলেমিশে এক মধুময়অনুভুতি সৃষ্টি করে। যেন এক সহাবস্থান। যেমন সহাবস্থান চিরন্তনের সাথে নতুনের। প্রতিবারই পুজো আসে একই রকম ভাবে। তাও প্রতিবারের পুজোই যেন নিজের মতো করে নতুন। সেই প্রতিমা, ভিড়, অঞ্জলির মন্ত্র, খাবারের লাইন, ঢাকের বাদ্যি— সবই হয় প্রতিবারের মতোই। অথচ সেই চিরাচরিত অনুশীলনের মধ্যেই প্রবাসী খুঁজে ফেরেনতুনকে। শারদীয়া দুর্গোৎসব তো পুরনো হওয়ার নয়!
  • Link to this news (আনন্দবাজার)