ডুয়ার্সে পর্যটকদের 'গোপন আকর্ষণ' বেড়াতে এসে এই মিউজিয়াম? না দেখলে বড় মিস!
বর্তমান | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: রাজবংশীদের ‘বুরাহি’ মুখোশ চেনেন? কিংবা ভুটানিদের ‘দেমন’ মুখোশ? জানেন কি, অসমিয়াদের ‘ভাওনা’ মুখোশ দেখতে কেমন হয়? এবার ডুয়ার্সের গোরুমারায় বেড়াতে এলে আপনি হারিয়ে যেতে বসা এসব মুখোশ চাক্ষুস করতে পারবেন। সঙ্গে দেখতে পাবেন এখানকার বিভিন্ন জনজাতির ট্রাডিশনাল পোশাক, কৃষি যন্ত্রাংশ কিংবা বাদ্যযন্ত্র। এই মিউজিয়ামে রয়েছে বৌদ্ধদের বাঁশি ‘ডুং’। লেপচাদের বিশেষ বাদ্যযন্ত্র ‘সুতসাং’। কোরা জনজাতির বাদ্যযন্ত্র ‘তৈলা’, সাঁওতালদের ঢাক, রাজবংশীদের একতারা সহ কত কী! প্রতিটি সামগ্রীর নাম, সেগুলি কারা ব্যবহার করেন বা করতেন তা উল্লেখের পাশাপাশি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সামগ্রীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। প্রতিদিনই খোলা থাকে ওই মিউজিয়াম। ২০ টাকার টিকিট কেটে যতক্ষণ ইচ্ছে সেখানে থরে থরে সাজানো জিনিসপত্র দেখার সুযোগ রয়েছে। ডুয়ার্সে প্রায় ৫২ জনজাতির মানুষ বাস করেন। একারণে ডুয়ার্সকে বলা হয় ‘মিনি ভারতবর্ষ’। তাঁদের পোশাক, খাবারদাবার, সংস্কৃতি সবই ভিন্ন। অথচ প্রতিটির মধ্যে লুকিয়ে নিজস্ব ঐতিহ্য। প্রাচীন সেই ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে লাটাগুড়িতে ওই মিউজিয়াম গড়ে তোলা হয়েছে। যার নেপথ্যে রয়েছেন গোরুমারার প্রথম গাইড মঙ্গল কোরা। এতদিন ডুয়ার্সের জঙ্গলে ঘুরতে এসে হাতির পিঠে কিংবা কার সাফারি করার পর আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখেই ফিরতেন পর্যটকরা। এতে ডুয়ার্সের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা জনজাতিদের সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানার সুযোগ থাকত না তাঁদের। সেকারণে এক ছাদের তলায় ডুয়ার্সের সমস্ত জনজাতির ব্যবহৃত ও হারিয়ে যেতে বসা জিনিসপত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মঙ্গল।অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজমের অন্যতম সদস্য তন্বিষ্ঠা রক্ষিত বলেন, মিউজিয়ামটি খুবই সমৃদ্ধ। এখানে ডুয়ার্সের প্রায় সমস্ত জনজাতির ব্যবহৃত জিনিসপত্র সযত্নে সংরক্ষণ করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয়, ওইসব জিনিসপত্র সম্পর্কে মঙ্গল কোরার মতো একজন মানুষ পর্যটকদের বর্ণনা দিয়ে থাকেন। ডুয়ার্সের বনবস্তির বাসিন্দা মঙ্গল নিজেই একটি জনজাতিভুক্ত। তাছাড়া তিনি গোরুমারার প্রথম গাইড। ফলে তাঁর কাছ থেকে ডুয়ার্সের জনজাতিদের খাবারদাবার, সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার সুযোগ সত্যিই অমূল্য।