• “মোদীজি লাদাখের জনগণকে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন” — বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি কংগ্রেস নেতার...
    আজকাল | ০১ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: লাদাখে গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে চার জন নিহত হওয়ার ঘটনায় সরব হলেন লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী। আজ একাধিক পোস্ট ও ভিডিও বার্তায় তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, “দেশসেবার পুরস্কার যদি গুলি হয়, তবে দেশপ্রেমিকেরা কীভাবে সম্মান পাবেন?” একইসঙ্গে তিনি এই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলেছেন।

    রাহুল গান্ধী এক পোস্টে লিখেছেন, “একজন প্রাক্তন সেনা পিতার ছেলে, নিজেও সেনা সদস্য। দেশপ্রেম তাঁদের রক্তে মিশে। অথচ বিজেপি সরকার তাঁদের উপর গুলি চালিয়ে এই সাহসী ছেলেকে হত্যা করেছে, কারণ সে নিজের অধিকার ও লাদাখের দাবির পক্ষে দাঁড়িয়েছিল।”তিনি প্রশ্ন তোলেন, “শোকগ্রস্ত বাবার চোখে একটাই প্রশ্ন — এটাই কি দেশের জন্য প্রাণ দেওয়ার পুরস্কার?”

    নিহতদের মধ্যে ছিলেন টসেওয়াং থারচিন, চার সন্তানের জনক। তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন এবং ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধে নিজের বাবার সঙ্গে একসঙ্গে লড়েছিলেন। ঘটনাটির একটি ভিডিও রাহুল গান্ধী তাঁর সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

    রাহুল গান্ধী বলেন, “আমাদের দাবি — একটি নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত হোক এবং দোষীদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হোক।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “মোদীজি, আপনি লাদাখের জনগণকে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তাঁদের ন্যায্য দাবি শুনুন, সংলাপে আসুন, হিংসা ও ভয়ের রাজনীতি বন্ধ করুন।”

    ২৪ সেপ্টেম্বর সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে শুরু হওয়া অনশন আন্দোলন টানা ১৫ দিনে পৌঁছে গিয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় উত্তেজনা ছড়ায় এবং তারপরই বিক্ষোভে গুলি চালানো হয়। ঘটনার পর থেকেই লাদাখের মানুষ ক্ষুব্ধ। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সরকারি মহল ও কিছু সংবাদমাধ্যম বিদেশি ষড়যন্ত্র হিসেবে তুলে ধরছে, যা স্থানীয়দের আরও উত্তপ্ত করে তুলছে।

    হিংসার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দায় চাপিয়েছে পরিবেশবিদ ও শিক্ষাবিদ সোনম ওয়াংচুকের উপর। অভিযোগ, তিনি ‘আরব বসন্ত’ বা ‘নেপালের জেন-জেড আন্দোলন’-এর ধাঁচে উত্তেজনামূলক স্লোগান দিচ্ছিলেন। সেই কারণেই তাঁকে জাতীয় নিরাপত্তা আইন (NSA)-এর আওতায় আটক করা হয়েছে এবং যোধপুর জেলে পাঠানো হয়েছে। লাদাখে মৃতদের রক্ত নিয়ে রাজনৈতিক সংঘাত আরও তীব্র হচ্ছে। একদিকে বিজেপি সরকার আন্দোলনকে বিদেশি ষড়যন্ত্র হিসেবে চিত্রিত করছে, অন্যদিকে বিরোধী শিবির একে সরাসরি মোদী সরকারের ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে আখ্যা দিচ্ছে।
  • Link to this news (আজকাল)