• প্রথা মেনে বেলুড় মঠে কুমারী পুজো
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০১ অক্টোবর ২০২৫
  • চিরাচরিত ঐতিহ্য মেনে বেলুড় মঠে আজ, মহাষ্ঠমীর সকালে কুমারী পুজো সম্পন্ন হল। ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে মহাস্নানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মহাষ্টমীর পুজো। সকাল ৯টায় দুর্গা প্রতিমার সামনে, মঠের মূল মন্দিরের পাশের অস্থায়ী মণ্ডপে শুরু হয় কুমারী পুজোর আনুষ্ঠানিকতা।

    এই বছরের কুমারী ছিলেন ৫ বছর ২ মাস বয়সি শ্রীণিকা মুখোপাধ্যায়। বেলুড় মঠে তাঁকে ‘উমা’রূপে পূজিত করা হয়। বেনারসি শাড়ি ও গয়নায় সজ্জিত কুমারীকে প্রথমে রামকৃষ্ণদেবের মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয় দর্শনের জন্য। সেখান থেকে মঠের সন্ন্যাসী ও স্বেচ্ছাসেবকদের কোলে চড়ে কুমারী পৌঁছান দুর্গা মণ্ডপে, যেখানে পরম শ্রদ্ধায় পালিত হয় কুমারী পুজোর সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান।

    হাতপাখায় বাতাস, উলুধ্বনি, ধুনুচি নৃত্য ও মন্ত্রোচ্চারণে মুখরিত হয়ে ওঠে পবিত্র মঠ প্রাঙ্গণ। পুজো শেষে কুমারীকে পুনরায় মঠের পুরনো মূল মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাকে বারান্দায় বসানো হয় যাতে হাজার হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থী তার দর্শন পেতে পারেন। এরপর কুমারীকে মঠের নিজস্ব গাড়িতে করে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।

    এরপর পৌনে ৬টায় শুরু হয় সন্ধি পুজো। উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্ট স্বামী গৌতমানন্দজি মহারাজ, সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ মহারাজ সহ অন্যান্য প্রবীণ সন্ন্যাসীবৃন্দ। কয়েক হাজার ভক্ত কুমারী পুজো দর্শনের পাশাপাশি প্রসাদ গ্রহণ করেন। লক্ষাধিক ভক্তের সমাগমে এবং কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সফলভাবে সম্পন্ন হয় এই আধ্যাত্মিক আয়োজনে।

    প্রসঙ্গত, ১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ বেলুড় মঠে দুর্গাপুজোর সূচনা করেন। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের শিষ্যা গৌরী মা’র ব্যবস্থাপনায় সেই বছরই স্বামীজী প্রথম কুমারী পুজো করেন। তিনি নিজে ন’জন কুমারীকে পাদ্য, অর্ঘ্য, শঙ্খ, বস্ত্র ও মিষ্টান্ন দিয়ে পুজো করেন এবং তাঁদের চরণে প্রণত হন। সেই গৌরবময় ঐতিহ্য আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করে চলেছে বেলুড় মঠ।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)