• অষ্টমীর দুপুরে সকন‍্যা দুগ্গাপুজো দেখতে অভিষেক, কথা বললেন বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে, সকলে মিলে খেলেন ফুচকাও
    আনন্দবাজার | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • অষ্টমীর বিকেলে কন্যা আজানিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরোলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘুরে দেখলেন দমদমের দু’টি পুজোমণ্ডপ। তার মধ্যে একটি পুজোয় ভিন্‌রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘হেনস্থা’র ঘটনাকে থিম করা হয়েছে। সেখানে হাজির কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিকের সঙ্গে কথাও বললেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। পরে সকলে মিলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকাও খেলেন।

    সম্প্রতি ভিন্‌রাজ্যে (মূলত বিজেপিশাসিত রাজ্যে) বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সরগরম হয়েছে রাজ্য-রাজনীতি। বিজেপির বিরুদ্ধে ‘বাংলা এবং বাঙালি অস্মিতা’য় আঘাত হানার অভিযোগ তুলেছে বঙ্গের শাসকদল। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। সেই ভোটে এই বিষয়টিই যে তৃণমূলের সবচেয়ে বড় ‘অস্ত্র’ হতে চলেছে, তা আগেই বুঝিয়ে দিয়েছেন দলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রেক্ষাপটেই অভিষেকের মেয়েকে নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরোনো, পুজোমণ্ডপে পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা এবং তার পর সকলে মিলে ফুচকার খাওয়ার ঘটনাকে মিলিয়ে দেখতে চাইছেন অনেকে। তাঁদের মত, দলনেত্রী মমতা রাজ্যের হাজার হাজার পুজোর উদ্বোধন করা থেকে শুরু করে কার্নিভাল পর্যন্ত নানা কিছুর সঙ্গে জড়িয়ে থাকেন। জড়িয়ে থাকেন তৃণমূলের অন্য নেতারাও। কিন্তু অভিষেকের ক্ষেত্রে বিষয়টি তেমন নয়। অতীতে তৃণমূল সাংসদকে এ ভাবে পুজোয় ঠাকুর দেখতে বেরোতেও দেখা যায়নি। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ‘বাংলা এবং বাঙালি অস্মিতা’ নিয়ে বার্তা দেওয়ার জন্য অভিষেক যে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকেই বেছে নেবেন, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।

    মঙ্গলবার বিকেলে অভিষেক প্রথমে যান দমদম জয়পুর জয়শ্রীর পুজোয়। সেখানে ভিন্‌রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর ‘হেনস্থা’র ঘটনাকে পুজোর থিম করা হয়েছে এ বার। মণ্ডপে ঠাকুর দর্শনের পর অভিষেক সেখানে উপস্থিত ১১ জন পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলেন এবং সাহায্যেরও আশ্বাস দেন। পুজো উপলক্ষে তাঁদের উপহারও দেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’।

    পরে অভিষেক বলেন, ‘‘দুর্গাপুজোয় বাড়ি ফিরে এসেছেন এই পরিযায়ী শ্রমিকেরা। ওঁদের আশঙ্কার কথা শুনেছি। ওঁদের আশ্বাস দিয়েছি যে, এ রাজ্যের মা-মাটি-মানুষের সরকার ওঁদের পাশে দাঁড়াবে। আমরা ওঁদের হয়ে লড়ব। ওঁদের সঙ্গে ফুচকাও খেয়েছি। আমাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যে একটা অটুট বন্ধন রয়েছে, তা এর থেকেই বোঝা যায়।’’

    দমদমের এই পুজোয় অভিষেকের সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক, তৃণমূল কাউন্সিলার অদিতি মুন্সি। ওই মণ্ডপ থেকে বেরোনোর সময় প্রবীণ সাংসদ সৌগতকে প্রণামও করেন অভিষেক। পরে তিনি যান বাগুইআটির আশ্বিনীনগর বন্ধুমহলের পুজোমণ্ডপে। সেখানেও থিম ছিল ‘বাংলা-বাঙালি’। ওই মণ্ডপে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং রাজা রামমোহন রায় প্রমুখ বাঙালি মনীষীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনও করেন তৃণমূল সাংসদ।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)